জড়ো হচ্ছেন নেতাকর্মীরা, বায়তুল মোকারমে কড়া নিরাপত্তা

Slider টপ নিউজ

Baitul Mukarram Mosque in Dhaka22
বায়তুল মোকাররম থেকে: আরাফাত রহমান কোকোর নামাজে জানাজাকে কেন্দ্র করে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ও তৎসংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ-র‌্যাবের পাশাপাশি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সাদা পোশাকধারী সদস্যদের নিয়ে পুরো বায়তুল মোকাররম এলাকাকে নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৭ জানুয়ারি) বাদ আসর বায়তুল মোকাররমে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে তারেক রহমানের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

জানাজায় অংশ নিতে ইতোমধ্যে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বায়তুল মোকাররম এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছেন। জড়ো হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এবং উৎসুক জনতাও। বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে বায়তুল মোকাররমে ইতোমধ্যে পৌঁছেছেন গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অধ্যাপক এমএ মান্নান।

জানাজাকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট, দক্ষিণ গেট, স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকা ও জুয়েলার্স মার্কেট এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ-ৠাব মোতায়েন করা হয়েছে। দায়িত্ব পালন করছেন সাদা পোশাকধারী বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও। এসব এলাকায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রিজন ভ্যান থেকে শুরু করে রায়টকার, এপিসি, জলকামান এবং ৠাকার পর্যন্ত।

এ বিষয়ে বায়তুল মোকাররম এলাকায় দায়িত্বরত খিলগাঁও জোনের সিনিয়র এএসপি নূর আলম বাংলানিউজকে বলেন, নিরাপত্তার খাতিরেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এই সতর্কাবস্থান। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর-অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে ৠাব-পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারাও দায়িত্ব পালন করছেন।

জানাজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যেন অবনতি না ঘটে সেজন্য বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটের দোকানপাট ও হকার ব্যবসায়ীদেরও তুলে দেওয়া হয়েছে। বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও ৠাব সদস্য মোতায়েন রয়েছে জুয়েলার্স মার্কেট, জিপিও ও পল্টন মোড় এলাকায়ও।

এদিকে, গুলশান থেকে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ বায়তুল মোকাররমে নিয়ে ‍আসা হচ্ছে। বেলা পৌনে ৩টার দিকে তাকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি জাতীয় মসজিদের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। সাড়ে ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি মহাখালী এলকায় পৌঁছায়।

গুলশানের কার্যালয় থেকে ছেলের কফিন অ্যাম্বুলেন্সে তোলা দেখেন মা খালেদা জিয়া। তার চোখ দিয়ে এসময় অঝোরধারায় অশ্রু ঝরতে দেখা যায়।

এর আগে, দুপুর দেড়টার দিকে কোকোর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স গুলশানে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে পৌঁছায়।

এরপর খালেদার কার্যালয়ের নিচতলার কনফারেন্স রুমে মরদেহ রাখা হয়। এ সময় মা খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

বায়তুল মোকাররমে নামাজে জানাযা শেষে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে কোকোকে।

এদিকে নিরাপত্তার কারণে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের গুলশানে কোকোর মরদেহ দেখতে আসতে নিষেধ করা হলেও হাজারো উৎসুক জনতার ভিড় জমে যায়। অনেক সিনিয়র নেতা গুলশানে এসে ফিরে যান।

এর আগে, বেলা পৌনে ১২টার দিকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কোকোর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামে।

বেলা সোয়া ১২টার দিকে মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স বিমানবন্দর থেকে রওয়ানা হয়।

পরিবারের পক্ষ থেকে কোকোর মরদেহ বুঝে নেন তার চাচাতো ভাই মাহবুব আল আমিন ডিউ। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন খালেদা জিয়া মনোনীত বিএনপির পাঁচ নেতা।

এরা হলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আবদুল্লাহ আল নোমান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয় থেকে রওয়ানা হয়ে তারা পর্যায়ক্রমে বিমানবন্দরের পৌছান। কোকোর মরদেহ বহনের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্সও বিমানবন্দরে পৌঁছায় যথাসময়ে।

এয়ারপোর্টে আরও উপস্থিত হন বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অধ্যাপক এমএ মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মীর নাছির উদ্দীন।

কোকোর মরদেহ আসা উপলক্ষে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা যেমন বাড়ানো হয়, তেমনি সীমিত করা হয় যান ও জন চলাচল।

গত শনিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় মালয়েশিয়ায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *