সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হানের শরীরে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এসব আঘাতের মধ্যে ৯৭টি নীলা ফোলা আঘাত ও ১৪টি জখমের চিহ্ন ছিলো।
শনিবার সন্ধ্যায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শামসুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আঘাতগুলো লাঠি দিয়েই করা হয়েছে। আর অতিরিক্ত আঘাতের কারণে শরীরের ভেতর রগ ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান রায়হান। আঘাতে শরীরের মাংস থেঁতলে যায়। রগ ফেটে গিয়ে আন্তঃদেহে রক্তক্ষরণ হয়। আর অতিরিক্ত আঘাতে বেহুশ হয়ে যান তিনি। আঘাত করার সময় রায়হানের পেট খালি ছিল। পেটে ছিল কেবল এসিডিটি লিকুইড।
তিনি আরো বলেন, ফরেনসিক রিপোর্টটি পিবিআই’র কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। রোববার (১১ অক্টোবর) সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হান মারা যান।
বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে ডা. শামসুল ইসলাম জানান, রায়হানের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাকে প্রচণ্ড মারধর করা হয়েছে। অতিরিক্ত আঘাতের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
একইদিন রায়হানের লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে আখালিয়া নবাবী মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে আবারো দাফন করা হয়।
গত ১১ অক্টোবর ভোরে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে ওসমানী মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রায়হানের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। এরপর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একইসাথে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়। ঘটনার পর রোববার থেকে আকবর পলাতক রয়েছেন।
মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআই’র টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরীর কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে।