ঢাকা: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে এক ধরনের ধূম্রজাল তৈরি হয়েছে। ৪ মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। যাতে তাকে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছে। পরনে একটি জ্যাকেট ও শার্ট। ভিডিওতে তিনি মন্তব্য করেন, সামনের কয়েকটি দিন হবে বাস্তব পরীক্ষার।
ওদিকে, ট্রাম্পের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে না, তার অবস্থা আসলে কি রকম। ফলে জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে ভীষণ উদ্বেগ। শনিবার সকালে হোয়াইট হাউজের চিকিৎসকদের টিম থেকে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের অবস্থার উন্নতি হচ্ছে।
তিনি হোয়াইট হাউজে ফেরার বিষয়ে কথাবার্তা বলছেন। কিন্তু এর কয়েক মিনিটের মধ্যেই হোয়াইট হাউজের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডো ভিন্ন রকম বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘন্টা ছিল অত্যন্ত উদ্বেগের। পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা হবে আরো ক্রিটিক্যাল। প্রেসিডেন্ট কীভাবে পুরোপুরি সুস্থ হবেন এখনও তার সুস্পষ্ট পথ আমরা পাইনি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথমে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এমন মন্তব্য জানালেও কয়েক ঘন্টার মধ্যে সুর পাল্টে ফেলেন। পরে নাম প্রকাশ করে দিয়ে তিনি বলেন, ট্রাম্প খুব ভাল আছেন। তাকে সুস্থ হতে দেখে চিকিৎসকরা যথেষ্ট সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এমন বক্তব্যের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেননি তিনি। তবে তার প্রাথমিক মন্তব্যের কথা জানতে পেরে প্রেসিডেন্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্পের একজন উপদেষ্টা। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ডনাল্ড ট্রাম্পের ভিডিও বার্তা ও হোয়াইট হাউজের উপদেষ্টাদের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে পুরো দিন এক অস্পষ্টতার মধ্যে কাটে। ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিকেল সেন্টারে প্রথমে তাকে নেয়া হলে তিনি জানান, যথেষ্ট সুস্থ বোধ করছেন না। সামনে যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা নিয়ে একটি গোল টেবিলে বসে ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি আগামী কয়েকটি দিন হবে বাস্তব পরীক্ষার। তাই আমরা দেখবো সামনের কয়েকটি দিনে কি ঘটে। তবে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ওয়াল্টার রিডের পরিস্থিতিতে পূর্ব সতর্কতার হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ওই হাসপাতালে বেশ কয়েকদিন থাকতে হতে পারে ট্রাম্পের। তার অবস্থা সম্পর্কে আরেকটি সূত্র জানায়, হাসপাতালে নেয়ার আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বাড়তি অক্সিজেন সরবরাহ দেয়া হয়। তিনি আরো বলেছেন, ট্রাম্প যখন শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় পড়েন এবং তার অক্সিজেনের মাত্রা কমে গিয়েছিল, তখনই তাকে হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ওদিকে হাসপাতালের বাইরে হোয়াইট হাউজের ডাক্তার সিন পি কনলি শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, ট্রাম্পের শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা নেই। তাকে ওয়াল্টার রিডে অক্সিজেন দেয়া হয়নি। আমার টিম এবং আমি প্রেসিডেন্টের চিকিৎসায় অগ্রগতিতে খুবই খুশি। তবে কবে নাগাদ প্রেসিডেন্ট হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন সে বিষয়ে কোনো সময়সীমা জানাতে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার সেন্টার ফর পলিটিকস-এর রাজনৈতিক বিশ্লেষক কাইল কোনডিক বলেছেন, দর্শনীয় বিষয় হলো- চিকিৎসকরা বলছেন এক কথা। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজের সূত্রগুলো বলছেন আরেক কথা। আবার দু’পক্ষই পরে তাদের বক্তব্য সংশোধন করছেন। ফলে এতে এই প্রশাসনের বিশ্বাসযোগ্যতাকেই সমস্যায় ফেলেছে।