সিলেট ব্যুরো: সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
একটি সূত্র জানায়, এই ধর্ষণের ঘটনা ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা । তারা আপস মীমাংসারও চেষ্টা চালান। প্রথমদিকে পুলিশও বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে এড়িয়ে যায়। পরে গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাওয়ায় ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা বিফলে যায়। তবে, দীর্ঘ সময়ক্ষেপণের কারণে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অভিযুক্তরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে স্ত্রীকে নিয়ে প্রাইভেটকারে করে এমসি কলেজে বেড়াতে যান দক্ষিণ সুরমা এলাকার এক যুবক। বিকেলে এমসি কলেজের ছাত্রলীগের ছয়জন নেতা তাদের ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে আসেন। এই ছাত্রনেতাদের প্রত্যেকেই ছাত্রাবাসে থাকেন। ছাত্রাবাসে এনে ওই দম্পত্তিকে প্রথমে মারধর করেন তারা। পরে ওই স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেন।
সন্ধ্যার পর এই খবর পেয়ে টিলাগড় এলাকার একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা ও কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। প্রথমে তারা বিষয়টি ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর তারা বিষয়টি আপসের চেষ্টা চালান। এসময় ধর্ষণের শিকার নারী ও তার স্বামীকে আপস মীমাংসার জন্য চাপ দেয়া হয় বলেও জানা গেছে।
তবে ধর্ষণের খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে হাজির হওয়ায় ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়। এসময় আওয়ামী লীগ নেতারাও ঘটনাস্থল থেকে সরে পড়েন। তবে আপসের চেষ্টায় অনেক সময় ক্ষেপণের সুযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা।
আপস মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট মহানগরের শাহপরাণ থানার ওসি কাইয়ুম চৌধুরী জানান, এক দম্পতিকে আটকে রাখা হয়েছে খবর পেয়েই আমরা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে যাই। এরপর সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করি। পরে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
ওসি বলেন, আমরা রাতে অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি। তবে ভোর ৩টার দিকে এমসি কলেজের হোস্টেলে অভিযান চালিয়ে সাইফুর রহমানের কক্ষ থেকে একটি পাইপগান, চারটি রামদা, একটি চাকু ও দুটি লোহার পাইপসহ বিভিন্ন জিনিস জব্দ করি। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা দায়ের করা হবে।