ঢাকা: ইউএনও হত্যচেষ্টার অভিডোগে আটক ৪ জনের মধ্যো নৈশ প্রহরী ছাড়া প্রধান অভিযুক্ত তিন জনই যুবলীগের নেতা। ৩ জনের মধ্যো প্রধান অভিযুক্ত সহ ২ জনকে সাময়িক বহি:স্কার করেছে যুবলীগ।
এই খবর জানিয়েছেন স্থানীয় সাংসদ শিবলী সাদিক।
আটক জাহাঙ্গীর ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক এবং ঘোড়াঘাট কাছিগাড়ি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জাহাঙ্গীর। আটক মাসুদ ঘোড়াঘাট উপজেলার দক্ষিণ দেবিপুর গ্রামের আদু মিয়ার ছেলে ও চিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। ৪্রধান অভিযুক্ত আসাদুল ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের সদস্য। দলীয়ভাবে আসাদুল ও জাহাঙ্গীরকে সাময়িকভাবে বহি:স্কার করা হয়।
এর আগে খবর ছিল দিনাজপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলার ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় সন্দেহভাজন ৪ জনকে আটক করেছে, র্যাব ও পুলিশ। পৃথক পৃথকভাবে তাদের আটক করা হয়।
আজ শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টায় সন্দেহভাজন প্রধান আসামী আসাদুল হক (৩২)কে র্যাব আটক করে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার হিলি সীমান্তের চুড়িপট্রি এলাকায়। তার বাড়ি ঘোড়ঘাট উপজেলার ৪ নং ঘোড়াঘাট ইউপি’র সাগরপুর গ্রামে। তার বাবার নাম আমজাদ হোসেন।
এর আগে ঘোড়াঘাট থেকে জাহাঙ্গীর (৩৬) ও মাসুদ রানা (৩৪) নামে আরও দু’জনকে আটক করে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। জাহাঙ্গীর ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক এবং মাসুদ চিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। কাছিগাড়ি গ্রামের আবুল কালামের ছেলে জাহাঙ্গীর এবং মাসুদ ঘোড়াঘাট উপজেলার দক্ষিণ দেবিপুর গ্রামের আদু মিয়ার ছেলে।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনাজপুর ডিবি গোয়েন্দা পুলিশ ইউএনও’র বাসভবনের নৈশ্য প্রহরী পলাশ (৪০)কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে।
ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলার ঘটনায় এপর্যন্ত আটক হয়েছে, ৪জন। তবে, এ বিষয়ে প্রশাসনের কেউ সঠিকভাবে মুখ খুলছেন না।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল ইসলাম এর আগে আসাদুল ও জাহাঙ্গীরকে আটক করার কথা স্বীকার করলেও এখন এ বিষয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাইছেন না।
ইাম প্রকাশে অনিচ্ছুক র্যাব-১৩ এর এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। কোন ক্লু পাওয়া গেলে গণমাধ্যমের সামনে আটককৃতদের হাজির করা হবে।
এদিকে ইউএনও ওয়াহিদা খানম এর উপর হামলা ঘটনায় তার ভাই ফরিদ শেখ ঘোড়াঘাট থানায় গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১১টায় একটি মামলা করেছেন। তবে.মামলায় কারো নাম উল্লেখ নেই বলে জানান, ওসি আমিরুল ইসলাম।
অন্যদিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর নৃশংস হামলার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নৈশ্যপ্রহরী পলাশকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৩রা সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমাম আবু জাফর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঘোড়াঘাট ইউএনওর বাসভবনের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলায় অংশ নেয় দু’জন। এদের মধ্যে একজন ছিল মুখোশ ও অন্যজন পিপিই (পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) পরা। যাতে তাদের চেনা না যায়। পাতলা হালকা গরনের দু’জন রাতে তারা এক এক করে বাড়িতে প্রবেশ করে এবং ঘটনার পর একই সঙ্গে বের হয়ে যায়।
সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে এমন কথা নিশ্চিত করেন, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ওয়াদুদ ভুইয়া ও পুলিশের রংপুর জোনের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য। এর আগেও একই কথা জানান, ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা। সেই সিসি ফুটেজ ধরেই এগোচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
অন্যদিকে দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হওয়া দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট ইউএনও ওয়াহিদা খানম দুর্বৃত্তদের নৃশংস হামলার বিষয়ে মুখ খুলেছেন,তাঁর আহত বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ।
তিনি জানিয়েছেন, বাসায় ঢুকে হামলাকারীরা বারবার ওয়াহিদা খানমের কাছে আলমারির চাবি চেয়েছে। চাবি না দিলে তার ৪ বছরের সন্তানকে মেরে ফেলার হুমকিও দেয় দেশজুড়ে আলোচিত এই হামলায় অংশ নেয়া এক ব্যক্তি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বেডে শুয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে সেই হামলার ঘটনা তুলে ধরেন ইউএনওর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ।
দেশজুড়ে তোলপাড় কেন্দ্র বিন্দু ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করার ঘটনা ঘটেছে,বুধবার দিবাগত রাত তিনটায় তাঁর সরকারি নিজ বাসভবনে।
এই হামলায় তাঁর বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলীও গুরুতর আহত হয়েছেন। ওয়াহিদা খানককে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হলেও তার বাবা চিকিৎসাধীন আছেন রংপুরে।