মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন, উত্তরা প্রতিনিধি: টাকার বিনিময়ে ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানায় কমিটি দেয়াকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ রেজওয়ান উল হোসেনের ছবিতে জুতা লাগিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বৃহত্তর উত্তরার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা।
আজ সকালে উত্তরা ১০নং সেক্টর সংলগ্ন ঢাকা-আশুলিয়া মহাসড়কে জুতা ও ঝাড়ু হাতে প্রতিবাদে অংশ নেয় তুরাগ, উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বিমানবন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ। এ সময় তারা ঢাকা মহানগর উত্তরের বিভিন্ন থানা সমূহে যেসকল কমিটি দেয়া হয়েছে সেটিকে প্রত্যাখান করে এবং সেই সাথে মহানগর উত্তরের স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন ও সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ রেজওয়ান উল হোসেনের পদত্যাগের দাবী জানায়।
এ বিষয়ে, দীর্ঘদিন ধরে তুরাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃত্বে থাকা শহীদুল ইসলাম দুলাল তার বক্তব্যে বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিগুলো টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে। তাই আমরা এসব কমিটিকে প্রত্যাখান করছি। সেই সাথে ঘুষখোর সভাপতি রবিন ও সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান ওরফে রিয়াজের পদত্যাগসহ ঘোষিত কমিটি স্থগিতের দাবী জানাচ্ছি।’ অন্যথায়, এই দুই নেতার দলবিনাশী অপকর্মের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে জানান তিনি।
ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি রবিন ও সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ান ওরফে রিয়াজকে চোর আখ্যা দিয়ে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয়া উত্তরা পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মির্জা খুরশেদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে জেল-জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হওয়া ত্যাগী নেতাদের বঞ্চিত করে বৃহত্তর উত্তরার থানাগুলোতে কমিটি দেয়া হয়েছে। এই ফখরুল ইসলাম রবিন ২০০৩ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল কমিটিকে কেন্দ্র করে ঘুষ-বাণিজ্যে জড়ানো দায়ে তিন মাসের জন্য দল থেকে বহিস্কৃত হয়েছিল।’ বিএনপির শক্তিশালী ভিতকে নষ্ট (দুর্বল) করার পেছনে এই রবিন-রিয়াজের মতো নেতাদের হাত রয়েছে বলে জানান বঞ্চিত এসব নেতারা।
এদিকে, এসব অভিযোগের বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিনের কাছে জানতে চাইলে টাকা লেনদের বিষয়টি অস্বীকার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের কোন প্রসঙ্গ কেউ প্রমাণ করতে পারবেনা আর এধরনের কোন বক্তব্য নাই। টাকার বিনিময়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি কোথাও হয়না।’ বিএনপির হাই কমান্ডের নির্দেশে স্বেচ্ছাসেবক দলের এসব কমিটি দেয়া হয়েছে বলে প্রতিনিধিকে জানান তিনি। এ সময় তিনি প্রতিবাদকারী (বঞ্চিত) নেতাদের দলের সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
তবে, থানা কমিটিগুলোতে কাউকে স্থান দেয়ার আগে মহানগরের অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা করা হয়েছিল কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল ইসলাম রবিন মহানগরের সকল নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে থানা কমিটির নেতা নির্বাচনের কথা জানালেও মহানগর উত্তরের একাধিক নেতা বলেছেন ‘থানা কমিটি দেয়ার ক্ষেত্রে সভাপতি রবিন ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ একাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এক্ষেত্রে তারা কারো সাথে সমন্বয় করেননি।’ এসব বিষয়ে জানতে, সংগঠনটির উত্তরের সাধারণ সম্পাদক গাজী মোঃ রেজওয়ান উল হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে, তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
স্বেচ্ছাসেবক দলের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে আজকের (২৪ জুলাই, ২০২০) জুতা ও ঝাড়– মিছিলে উপস্থিত ছিলেন অতীতে বিএনপির কালো পতাকা মিছিলে অংশ নিয়ে ডিবির হাতে ধরা পড়ে দীর্ঘদিন জেলা খেটে বের হওয়া উত্তরা পশ্চিম থানা স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা হাজী মোঃ সেলিম হাওলাদার, উত্তরা পূর্ব থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ইমরান হোসেন, মোজাম্মেল হক, উত্তরখান থানা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আমির, বিমানবন্দর থানার রনু মোল্লা ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা শরীফ, রাসেলসহ বৃহত্তর উত্তরার প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী।