ঢাকা: প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে সবার হাতে ন্যূনতম একটি স্মার্ট ফোন তো আছেই। তার সাথে রয়েছে ল্যাপটপ ডেস্কটপের মতো কম্পিউটার। ডিজিটাল মাধ্যমে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয় তথ্য, ছবি আমরা সংরক্ষণ করে রাখি। কিন্তু সংরক্ষিত তথ্যগুলো কতটা সুরক্ষিত? ইলেকট্রনিক ডিভাইস নষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক, নষ্ট হলে সেগুলো রিপেয়ার করতে দিতে হয় দোকানে। কিন্তু সেখান থেকে আমাদের ব্যক্তিগত তথ্যগুলো চুরি হচ্ছে না তো?
বাংলাদেশের নামকরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে আমরা এমনই একটি অভিযোগ পাই। ভিকটিমের সাথে কথা বলে জানা যায় তার হবু বর উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে ইউএসএতে গমন করেন। সেখানে থাকাকালীন তাদের ভিতর বেশ কিছু গোপন ছবি আদান-প্রদান হয়। ইউএসএ তে থাকা অবস্থাতেই এক সন্ত্রাসী হামলায় তার হবু স্বামী নিহত হয়। তার বেশ কিছুদিন পর থেকেই ভিকটিমকে একটি বিদেশি নাম্বার থেকে বার বার ফোন দিয়ে হ্যাকার ও সাইবার বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে বলা হয় তার এবং তার হবু স্বামীর বেশ কিছু গোপনীয় ছবি ও ভিডিও হ্যাকারের হাতে এসেছে এবং এই ছবিগুলো অনলাইন থেকে মুছে দিতে হলে তাকে ইউএস ডলার প্রেরণ করতে হবে। ডলার প্রেরন না করলে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ছড়িয়ে দেয়া হবে। ভিকটিমকে সেসব ছবির কিছু স্যাম্পল প্রেরণ করে। সেসব ছবি দেখে ভিকটিম বুঝতে পারে সে তার হবু স্বামীর সাথে যেসব ছবি শেয়ার করেছিল এগুলো তারই অংশ। এমনিতেই হবু বরের মৃত্যুতে ভিকটিম খুবই ভেঙে পরে অন্যদিকে হ্যাকার পরিচয় দানকারী ব্যক্তি বিষয়টি সমাধানের জন্য ভিকটিমকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। ভিকটিমের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিষহ, জীবন যেন থেমে যাচ্ছিল।
ভিকটিম সাইবার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করলে তার সাথে দীর্ঘ আলোচনায় সিআইডি সাইবার পুলিশ জানতে পারে যে, ভিক্টিমের হবু স্বামীর মৃত্যু হলে ইউএসএ পুলিশ তদন্ত সমাপ্ত করে নিহতের ব্যবহৃত ডিভাইস এবং ল্যাপটপ বাংলাদেশে তার পরিবারের কাছে প্রেরণ করে। যেহেতু ডিভাইসটি লক করা ছিল তাই সেটি ব্যবহার করতে পারছিলেন না পরিবারের লোকজন, ল্যাপটপটি আনলক করতেই একটি দোকানের দ্বারস্থ হন। তবে ভিকটিমের ধারণা ছিল না এখান থেকে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে কেননা যে নাম্বার থেকে ভিকটিমকে বিভিন্ন ছবি প্রেরন করা হচ্ছিল সেটি একটি ইউএস এর নাম্বার।
সাইবার পুলিশের একটি বিশেষ টিম ওই নাম্বারের সূত্র ধরে এই অপরাধের সাথে জড়িত শাকিল মাহমুদ (২১) কে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে। তার কাছ থেকে ব্লাকমেইলিং এর সাথে যুক্ত সকল তথ্য-প্রমান উদ্ধার করে। যে রিপেয়ার শপে উক্ত ডিভাইস ঠিক করতে দেয়া হয়েছিল শাকিল সে দোকানের ম্যানেজার ও দক্ষ টেকনিশিয়ান। তার বিরুদ্ধে ডিএমপি’র নিউমার্কেট থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইনের যে কোন ধরনের গুজবসহ যেকোন সাইবার অপরাধের তথ্য সিআইডির সাইবার পুলিশের সাথে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। এ ইউনিটের সাথে যোগাযোগের জন্য নিম্নোক্ত যেকোন মাধ্যম ব্যবহার করে যেকোন সময় যোগাযোগ করতে পারেন।
ফেসবুক পেজ- https://www.facebook.com/cpccidbdpolice/
২৪/৭ কন্টাক্ট নম্বর- ৯৯৯ অথবা +৮৮ ০১৭৩০ ৩৩৬ ৪৩১
এবং ইমেইল- [email protected]