বিএনপি জামায়াতকে জঙ্গী সংগঠন আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামীলীগসহ অন্যান্য দলের সংসদ সদস্যরা। তারা বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসুচীকে জনগনের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার যুদ্ধ আখ্যায়িত করে বলেন, খালেদা জিয়ার নির্দেশে খুনের ঘটনা ঘটনা ঘটছে। তাকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধে ও রাষ্টদ্রোহিতার অভিযোগ এনে বিচার করার দাবি জানান।
মঙ্গলবার মাগরিবের বিরতির পর থেকে পয়েন্ট অব অর্ডারে অনির্ধারিত দীর্ঘ বক্তব্যে সরকারি দল, বিরোধী দলসহ অন্যান্য দলের সদস্যরা বক্তব্য দিয়ে বিএনপি জোটের চলমান অবরোধ কর্মসুচীর কঠোর সমালোচনা করেন। আলোচনার সূত্রপাত করেন সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রীা রওশন এরশাদ।
অনির্ধারিত এই আলোচনায় অংশ নিয়ে শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আমাদের দেশের আতেল বুদ্ধিজীবীঅ আছে। দুই নেত্রীর মধ্যে বসার কথা বলে। যারা মানুষ হত্যা করে তাদের সাথে কিসের কথা বলা। ৫ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। ৫ বছর পর নির্বাচন পর নির্বাচন হবে। কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ। কারণ উনি এখনো এদেশকে মেনে নিতে পারেননি।
তিনি বলেন, এখন বসে থাকা যাবেনা। অপরাধী যত শক্তিশালী হোক আহবানা জানাবো অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করে, অবিলম্বে মানবতা বিরোধী অপরাধে বিচার করা হোক, রাষ্ট্রদ্রোহীর অপরাধে বিচার করা হোক। তাকে ক্ষমা করা যাবেনা। তার বেয়াদব ছেলে বঙ্গবন্ধুর ব্যাপারে কটুক্তি করছে। অবাক হই মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করে। উনি ওখানে বসে পিকনিক করছে। একছেলে লন্ডন একজন মালয়েশিয়্া। উনাদের কি, মানুষ পুড়ে মরুক। স্বামীর প্রতি তার বিন্দুমাত্র দরদ নেই। জন্মবার্ষিকীতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত একটা মিলাদ পড়েনি। বাক্স্রে স্বামী নেই তাই ওই মাজারের ধারে যায়নি। ১৫ আগষ্ট জন্ম দিবস পালন করেন। এদের সাথেতো আলোচনায় হতে পারোন।
খালেদা জিয়া আপনি অপরাধ করছেন। কত বড় ইন্টারন্যাশাল টাউট। টাউটের সীমা আছে। মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা নাকি সমবেদনা জানিয়েছেন। বিজিপি সভাপতি অমিত শাহ নাকি টেলিফোন করে নাকি সমবেদনা প্রকাশ করলে। দৃুই দিন পর সব ফাস হয়ে গেল। এরা সন্ত্রাস, জঙ্গী সংগঠন। জঙ্গী সংগঠনকে আরআগাতে দেয়া যায়না। বিএনপি জামায়াতকে জঙ্গী আখ্যা দিয়ে নিষেধ করা হেহাক। খালেদা কে গ্রেফতার করা হোক। হত্যা ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধে বিচার করা হোক। তাকে বাইরে এদেশের মানুষেরও ক্ষতি হবে। কঠোর হতে হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রামে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হোক।
তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেশবাসির কাছে মাফ চান। শেখ হাসিনার কাছে মাফ চাইতে হবে। সংলাপ না করে অপরাধ করেছেন মাফ চান।
বানিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, খালেদা জিয়া তার স্বামীর কবরও জেয়ারত করতে যাননি। খালেদা জিয়াকে ‘নিষ্ঠুর ও পাষাণ’। তিনি এতোটাই নিষ্ঠুর ও পাষাণ। তিনি তার প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানের জন্মদিনে কবর জিয়ারত করতেও যাননি। তিনি কি নিষ্ঠুর হতে পারেন, কী পাষাণ হতে পারেন। তিনি নির্দেশ দিয়ে নিরাপরাধ মানুষদের তিনি হত্যা করেছেন।
তোফায়েল বলেন, একটি অফিসে বসে খালেদা জিয়া মানুষ হত্যার নির্দেশ দিচ্ছেন। খুনের নির্দেশ দিয়ে খালেদা জিয়া খুনীর কাতারে নাম লিখিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ক্যান্টনমেন্টে ছিলেন। সে সময় তার স্বামী তাকে নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আজকের বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।
তিনি আরও বলেন, মানুষ রাজনীতি করে জনগণের জন্য। খালেদা জিয়া তার অফিসে থাকবেন। যতোক্ষণ এ সরকারের মাধ্যমে তিনি নির্বাচন আদায় করতে না পারবেন। এটা কেমন রাজনীতি?
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিশ্ব ইজতেমায়ও তিনি হরতাল ও অবরোধ ডেকেছেন। লাখ লাখ মানুষ ইজতেমায় অংশ নিয়ে প্রমাণ করেছেন, তার অবরোধ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আন্দোলন কাকে বলে, খালেদা জিয়া আপনি বোঝেন না। এই মহিলা বিএনপির চেয়ারপার্সন, তার টার্গেট হলো গরীব দুখী মানুষ, শ্রমিক, হেলপার। এটা রাজনীতি? এতে তিনি সফল হবেন না। কোনো আন্দোলনে তিনি সফল হননি। তিনি আগেও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন, পারেননি। ইয়াজউদ্দিনকে প্রেসিডেন্ট করে আবারও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন, পারেননি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে চেয়েছেন তিনি, পারেননি। তিনি কোথাও সফল হননি।
খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি জামায়াতের যে আন্দোলন তাদের দাবি আবার তত্বাবধায়ক দিতে হবে। আসলে তাদের মুল এজেন্ড তত্ত্বাবধায়ক নয়। খালেদা ও তারেক কিভাবে মামলা থেকে অব্যাহতি পাবে। ৭১ ঘাতকরা কিভাবে রেহাই পাবে, মুক্তি পাবে। তত্ত্বাবাধায়ক যৌক্তিকতা আর নেই। আইএস ও লাদেনদের প্রেতাত্মারা যারা তাদের সাথে আলোচনা নয়।, এদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে।
আব্দুল মতিন খসরু বলেন, মামলা করে তাদেরকে গ্রেফতার করেন। তাহলে বোঝা যাবে কিছু করেছেন। পরবর্তী ঘোষনা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে কিভাবে বলতে পারেন। তার প্রত্যেক কথার জন্য মামলা করেন। গ্রেফতার করেন। স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলের মতো কথা বললে হবে না। সন্ত্রাস বাংলাদেশের মাটিতে থাকতে পারে না। নিরবতা আনার জন্য যা যা করতে হবে, তা তা করতে হবে। ভাষণ দিয়ে এড়িয়ে যাবেন তা হবে না। মানুষ যেনো ভয় না পায়। কারও সন্তান স্কুলে যাবে না, এ অবস্থা দেশবাসী দেখতে চায় না। অর্থনৈতিক সব সূচকে সরকারের সফলতা সবাই স্বীকার করে। সব কিছুর পরে মানুষ শান্তি ও নিরাপত্তা চায়। প্রধানমন্ত্রী কবে আমাদের এ শুভ বার্তা শোনাবেন, সেটা জাতি অপেক্ষা করে শুনতে চায়।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভা-ারি বলেন, খালেদা জিয়ার উচ্চারণ করতেও আমার লজ্জা হয়। কোনো ধর্ম তার কাছে নিরাপদ নয়। তিনি কোরআন শরীফ জ্বালিয়েছেন। তিনি মিথ্যাবাদী। তিনি বলেন, আগামী পাঁচদিনের মধ্যে এ অবরোধ তুলে না নিলে সেনাবাহিনীসহ যৌথ বাহিনী নামানো হোক। জঙ্গী নেতা খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হোক।
ওয়ার্কাস পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, খালেদা জিয়াকে ৩০ খুনের আসামী করে দমন কার্যক্রম শুরু করা হোক।
স্বমন্ত্রী মো: নাসিম বলেন, উনি নির্বাচন হবে। ২০১৯ সালে। কার সাথে সংলাপ। জনগন শেখ হাসিনার সাথে। তার সাথে জগগন নেই। তার নেতারাওতো আন্ডারগ্রাউন্ডে। আমাদের নেত্রী হচ্ছেন মেসি নেইমারের মতো খেলোয়ার। আমাদের নেত্রী জিতবেন। তিনি হেরে যাবেন। ঘরে ফিরে যাবেন।