রাস্তায় স্বামীর মরদেহের পাশে বসে কাঁদছেন স্ত্রী! করোনার ভয়ে কেউ আসেনি

জাতীয়


সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ পবন রাণী শীলের বৃদ্ধ স্বামী অমল শীল (৬৫) কয়েকদিন ধরে অসুস্থায় ভুগছিলেন। অর্থাভাবে সময় মতো চিকিৎসা না করতে পেরে অবশেষে ধারদেনা করে অসুস্থ থাকা অবস্থাতেই বৃদ্ধ স্বামীকে নিয়ে অটোরিকশা যোগে চিকিৎসার জন্য নিয়ে ছুঁটছিলেন হাসপাতালে ওই বৃদ্ধেরই স্ত্রী।

এরপরে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বৃদ্ধ অমল শীল। তবে, বৃদ্ধ মারা গেলে করোনা উপসর্গের সন্দেহ করে বহনকানী অটোরিকশা চালক রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। এরপর স্বামীর পাশে বসেই অঝড়ে কাঁদছিলেন তার স্ত্রী। করোনার ভয়ে সৎকারের জন্য সহযোগিতা করতে কেউ এগিয়ে আসেনি।

আজকে শুক্রবার (১০ ই জুলাই) দুপুরের দিকে এমনি এক ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী পৌরসভার উত্তর চামুরিয়া গ্রামে। এরপরে এমন ঘটনার খবর শুনে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও ইসলামী ফাউন্ডেশনের সদস্যদের সহযোগিতায় তার সৎকার করা হয়েছে।

এদিকে জানা যায়, “গত ১০ দিন যাবৎ বৃদ্ধ অমল শীল ঠান্ডা-জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার সকালে অটোরিকশা যোগে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান। অটোচালক রাস্তার পাশে ফেলে গেলে স্ত্রী ছাড়া কেউ প্রথমে লাশের কাছে আসেনি। এরপরে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়।”

অমল শীলের স্ত্রী পবন রানী শীল জানিয়েছেন, “আমার স্বামীকে কয়েক দিন আগে হাসপাতালে ভর্তিও করেছিলাম। অসুখ পুনরায় বেশী হলে অটোরিকশা যোগে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যেই সে মারা যায়। সে কয়েকদিন ধরে ঠান্ডা জ্বর ও কাঁশিতে ভুগছিলেন।”

স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এনামুল হক বলেছেন, “যখন জানতে পারলাম করোনার ভয়ে গ্রামের কেউ সৎকারে এগিয়ে আসছে না, তখন পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় লাশ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয়।”

আর এ বিষয়ে কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান আল মামুন জানিয়েছেন, “অমল শীল করোনায় মারা গেছেন এই ভয়ে আত্মীয়-স্বজনরা কেউ সৎকারে এগিয়ে আসছে না, এমন খবর পাওয়া মাত্রই থানার এক পুলিশ সদস্য এসআই হেলাল মাহমুদকে সেখানে পাঠানো হয়। এরপরে স্থানীয় লোকজন ও উপজেলা ইসলামী ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় লাশ দাহ করা হয়।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: সাইদুর রহমান জানিয়েছেন, “ওই মৃত ব্যক্তির করোনা হয়েছিল কি না সেই পরীক্ষা করার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছ।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *