ঢাকা: দেশের থানাগুলোতে দায়িত্বপালনরত ৬৬০ জন ওসিকে কঠোর বার্তা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ।
ওসিদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, বর্তমানে সরকারি বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সুন্দরভাবে জীবন চালানো যায়। একজন সরকারি কর্মচারীর ব্যয় হতে হবে তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে বিলাসী জীবনযাপনের স্থান পুলিশের চাকরি নয়। দুর্নীতিবাজরা পুলিশে থাকতে পারবে না। বড়লোক হতে চাইলে তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করুক।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা দেশের ওসিদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি তার এই অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন। দেশের সব থানার ওসির সঙ্গে কোনো আইজিপি’র এ ধরনের মতবিনিময় এবারই প্রথম।
ওসিদের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, আপনারা নিজে অবৈধ উপায়ে কোনো অর্থ উপার্জন করবেন না, অন্য কাউকে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগও দেবেন না। কোনো ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাও আপনাদের কাছে ঘুষ বা মাশোহারা চাইলে তা আমাকে নির্ভয়ে জানান। আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখবো।
পুলিশ প্রধান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করতে কাজ করছি আমরা সবাই। সবার আগে বাংলাদেশ পুলিশ হবে দুর্নীতিমুক্ত, মাদকমুক্ত। দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। পুলিশকে হতে হবে মাদকমুক্ত। সাধারণ মানুষকে নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে পুলিশকে বেরিয়ে আসতে হবে। শারীরিক শক্তি ব্যবহার না করে আইনি সক্ষমতা ও মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে।
আইজিপি বলেন, সৎ ও স্বচ্ছ উপায়েও যেনো পুলিশের প্রত্যেক সদস্য জীবনযাপন করতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সদস্যদের জন্য কল্যাণ পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। ৬৬০ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি। আপনাদের ওপরই পুলিশের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে এবং আপনাদের প্রত্যেককে একজন ‘সোশ্যাল লিডার’ হিসেবে সম্মান করে।
বর্তমানে করোনায় পুলিশের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে পুলিশ প্রধান বলেন, গত তিন মাসে পুলিশ জনগণের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য যা করেছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব।