ঢাকা: করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে কয়েক মাস ধরে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম পিছিয়ে পড়ছে। এজন্য শীঘ্রই কলেজে (এইচএসসি) ভর্তি কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে ঢাকা-১০ আসনের শফিউল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে একাদশ শ্রেণিতে (এইচএসসি) ভর্তি কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। তবে নীতিমালার আলোকে খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
পরীক্ষা ছাড়াই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পাসের সিদ্ধান্ত
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনা সংক্রমণের এ পরিস্থিতিতেও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নীতিমালা-২০২০ ইতোমধ্যে প্রণয়ন করা হয়েছে। গত ৩১ মে এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলেও কোভিড-১৯ এর কারণে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। ভর্তির বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড প্রস্তত রয়েছে। খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে করোনার কারণে ইতোমধ্যে বেশ কিছু কলেজে একাদশ শ্রেণির পরীক্ষা ছাড়াই পাস দেখিয়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হয়েছে।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতি কত দিনে স্বাভাবিক হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত নয় সংশ্লিষ্টরা। ফলে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়েও উদ্বেগে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অন্যান্যরা।
জানা গেছে, আগামী মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়া স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, ১৫ থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রথম সাময়িক, ৯ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে দ্বিতীয় সাময়িক এবং ২ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা।
কিন্তু করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিকের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। এইচএসসি-সমমান পরীক্ষাও স্থগিত হয়ে গেছে। আর ১৯ থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পঞ্চমের সমাপনী পরীক্ষার সূচি রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে সামনে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে জুলাই মাসের মধ্যে করোনার প্রকোপ না কমলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাময়িক পরীক্ষা ছাড়া শিক্ষার্থীদের পাস করানো হতে পারে। মাধ্যমিক পর্যায়েও এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লা গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার চাইতে আমরা তাদের পড়ালেখাকে বেশি গুরুত্ব দেই। পরীক্ষা হচ্ছে কাগজে-কলমে একটি অধ্যায় মাত্র, তার চাইতে জরুরি শিক্ষার্থীর পড়ালেখা অব্যাহত রাখা। চলতি মাসের ওপর ভিত্তি করে সাময়িক পরীক্ষার আয়োজন করা হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।