ঢাকা: চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া মর্নিং বার্ড লঞ্চের ভেতর থেকে ১৩ ঘণ্টা পরে সুমন বেপারী উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি নিয়ে ধূ¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, এটি সুমনের নাটক। কেনো কী কারণে সে এই নাটক সাজিয়েছে তা জিজ্ঞাসাবাদ করলেই জানা যাবে। যদিও সুমন বেপারী উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি দেশী-বিদেশী মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচার পেয়েছে। কিন্তু মিটফোর্ড হাসপাতাল সূত্র বলেছে, ১৩ ঘণ্টা পানির নিচে আটকা থাকলে যে লক্ষণগুলো থাকার কথা তা সুমনের শরীরে দেখা যায়নি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উদ্ধার কর্মীদের একজন ফায়ারম্যান জানান, নদী থেকে উদ্ধার করা যাত্রী সুমন নিজেই ভেসে উঠেছেন। পরে আমরা তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই। তবে ১৩ ঘণ্টা পানির নিচে থাকার সিমটম তার মধ্যে ছিল না। এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তিনি। মিটফোর্ড হাসপাতালে কমর্রত এক ওয়ার্ড মাস্টার সুমন বেপারীকে ভর্তি নিতে রিসিভ করেন। তিনি জানান, ১৩ ঘণ্টা পানির নিচে থাকলে তার মধ্যে কিছু সিমটম থাকবে। তা ছাড়া তার পেটে পানি থাকবে। সেসব কিছুই নেই।
গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক সদস্য জানান, ডাহা মিথ্যে। পানির নিচে ১৩ ঘণ্টা থাকলে তার শরীরে যে সিমটম থাকবে তা নেই। এ দিকে মিটফোর্ড হাসপাতালের বহির্বিভাগ ভবনের ৬ষ্ট তলার মেডিসিন ইউনিট ৫ এর ২২ নম্বর সিটে ভর্তি সুমন বেপারী। তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, মুন্সীগঞ্জ জেলার কাঠপট্টি ঘাট থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় মর্নিং বার্ড লঞ্চে ওঠেন তিনি। বুড়িগঙ্গার তীরে শ্যামবাজার ফরাশগঞ্জ ঘাটে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় ময়ূর-২। এ সময় লঞ্চের ভেতরে ছিলেন সুমন বেপারী। দীর্ঘ সময় পানির নিচে আল্লাহ রাসূলের সা: নাম স্মরণ করতে থাকি। পরে উপরে ভেসে উঠি। উদ্ধারকর্মীরা তাকে হাসপাতালে পাঠায় বলে জানায় সুমন। তিনি বলেন, তার বয়স (৩২)। সদরঘাট লঞ্চে হকারি করেন। ঝুড়িতে ফল বেচেন। পিতার নাম ফজর আলী বেপারী। মুন্সীগঞ্জ জেলার টুঙ্গিবাড়ির আব্দুল্লাহপুরে বাড়ি। ৮ ভাই বোনের মধ্যে ছোট তিনি। এখনো বিয়ে করেননি।
তবে সদরঘাট এলাকার একাধিক হকার জানান, তারা এই সুমন বেপারীকে কোনোদিন সদরঘাট এলাকায় হকারি করতে দেখেননি। সদরঘাটে হকারি করলে অবশ্যই তাকে চেনার কথা বলে একাধিক হকার উল্লেখ করেন। তাদের বক্তব্য সুমন বেপারী হয়তো কোনো উদ্দেশ্যে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।