ব্যাংকের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) তথ্য বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে জারিকৃত নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) জানিয়েছে, কোভিড-১৯ অতিমহামারির সময়ে করদাতাগণ ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনরূপ যেন সমস্যার সম্মুখীন না হন এবং সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ক্ষতিগ্রস্তরা সহজে পেতে পারেন সেটি নিশ্চিত করতে ঋণ গ্রহণকারীর ভ্যাট তথ্য বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ঋণ প্রস্তাবের সঙ্গে ভ্যাট তথ্য দাখিল করার জন্য গত ১৮ই জুন জারিকৃত নির্দেশনাটি বাতিল করা হয়েছে মর্মে ভ্যাট নিরীক্ষা,গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর মঙ্গলবার কেন্দ্রিয় ব্যাংককে একটি পত্র পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে ভ্যাট নিরীক্ষা,গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মুশফিকুর রহমান বলেন, অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ বৃদ্ধির কৌশল হিসেবে করদাতাদের ভ্যাট দাখিলপত্রে প্রদর্শিত ক্রয়-বিক্রয় সংক্রান্ত তথ্যাদির সঠিক যাচাই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আর্থিক হিসাব বিবরণী বা নিরীক্ষা প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু দেশে বিদ্যমান করোনা অতিমহামারির মধ্যে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আগে জারিকৃত ওই নির্দেশনা প্রতিপালন করতে গিয়ে করদাতারা যেন কোনরূপ সমস্যার সম্মুখীন না হন, সেজন্য নির্দেশনাটি বাতিল করা হলো।
এর পাশাপাশি করোনা প্রার্দুভাব মোকাবিলায় সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে,সেটি যেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সহজে পেতে পারে তা নিশ্চিত করার বিষয়টিও আমরা বিবেচনায় নিয়েছি বলে তিনি জানান।
মুশফিকুর রহমান বলেন, এনবিআরের নির্দেশনাকে অজুহাত হিসেবে দাঁড় করিয়ে কোন কোন ব্যাংক ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে বলে অভিযোগ পাচ্ছি। কিন্তু আমরা মনে করি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক গতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন জরুরি। তাই এই নির্দেশনার কারণে কেউ যেন ঋণ থেকে বঞ্চিত না হন, সেজন্য ওই নির্দেশনাটি বাতিল করা হলো।
তবে অডিটের মাধ্যমে ব্যাংকে দাখিলকৃত তথ্যাদি যাচাইয়ে এনবিআরের যে চলমান কার্যক্রম সেটি অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৮ই জুন এনবিআর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য যে নির্দেশনা জারি করে, তাতে বলা হয় গ্রাহক ঋণের আবেদন করলে অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ হিসেবে ভ্যাট রিটার্নের তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হবে। অর্থাৎ ব্যাংক ঋণ অনুমোদনে ভ্যাটের তথ্য বাধ্যতামূলক করা হয়।
রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার জন্য অনেক প্রতিষ্ঠান একাধিক অডিট রিপোর্ট করে। মূলত রাজস্ব ফাঁকি রোধে এনবিআর ভ্যাট তথ্য দাখিলের নির্দেশনাটি জারি করে।।