ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে করোনা ও করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু কমেনি। ২রা মে হাসপাতালটিতে করোনা ইউনিট চালুর পর থেকে গড়ে প্রতিদিন ১৪ জন করে রোগী মারা যাচ্ছেন। হাসপাতালের মর্গসূত্রে জানা গেছে, শুরুর পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করোনা ইউনিটে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭৭১ জন রোগী। যাদের মধ্যে ১৭৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ছিল। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। যারা মারা গেছেন তারা করোনা ইউনিটে ভর্তির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেছেন। করোনা ইউনিটে ২২ জুন পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে ভর্তি হয়েছেন ৩ হাজার ৩৭০ জন রোগী। এরমধ্যে ১ হাজার ৩৪০ জন রোগী করোনা সংক্রমিত ছিলেন।
ভর্তি রোগীর সঙ্গে মৃত্যুর পর্যালোচনায় দেখা যায় ২১ শতাংশের বেশি রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। এছাড়া উপসর্গ আছে এমন অনেক রোগীদের করোনা পরীক্ষা মৃত্যুর আগে পরে করা হয়না বলেও অভিযোগ আছে। আর সাধারণ মৃত্যুর ক্ষেত্রেও টেস্ট করা হয়না। শুধুমাত্র চিকিৎসকদের পরামর্শ মতেই মৃত ব্যক্তির করোনা পরীক্ষা করা হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিতে আসা বেশিরভাগ রোগীই সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আসেন। যাদের অবস্থা এতটাই খারাপ থাকে আইসিইউ সাপোর্ট দিয়ে তাদেরকে বাঁচানো সম্ভব না। অনেকেরই আবার পুরাতন শ্বাসকষ্ট, কিডনি, হার্ট ও ডায়বেটিকসের সমস্যা ছিল। যাদেরকে হয়তো আরো আগে থেকে আইসিইউ সাপোর্ট দিলে বাঁচানো যেত। কর্তৃপক্ষ এও দাবি করছেন, ঢাকা মেডিকেলে কোভিড ও নন কোভিড উভয় রোগীদের চিকিৎসার সুযোগ থাকাতে দেশের দুরদুরান্তের বিভিন্ন অঞ্চলের রোগীরা হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ঘুরে ঘুরে কোথাও চিকিৎসা না পেয়ে এখানে আসেন। অনেক রোগীদের আবার মৃত অবস্থায় এখানে আনা হয়। কিছু রোগীরা হাসপাতালে পৌঁছার পরপরই মারা যান।
অনুসন্ধান, চিকিৎসক, রোগী ও রোগীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেলে সঙ্কটাপন্ন করোনা রোগীরা যে ধরনের সাপোর্ট পাওয়া দরকার সেটি পাচ্ছেন না। আইসিইউ থেকে শুরু করে অক্সিজেন সাপোর্ট হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত না। হাসপাতালের করোনা ইউনিট-১ ও ২ মিলিয়ে মোট ৮২০টি করোনা শয্যার বিপরীতে মোট আইসিইউ ও এইচডিইউ সাপোর্ট রয়েছে ৪২টি। যেটি একেবারেই পর্যাপ্ত না। কারণ আইসিইউর জন্য প্রতিদিনই শত শত রোগীর স্বজনরা লাইন দিচ্ছেন। দিনের পর দিন লাইন দিয়ে আইসিইউ ও এইচডিইউতো মিলছে না। সেন্ট্রাল অক্সিজেন দিয়েই ৮২০ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে এখানে। অনেক সময় সঙ্কটাপন্ন রোগীদের সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপোর্টের বাইরে বাড়তি সাপোর্ট লাগে। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের পাশাপাশি কয়েকটি হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার ব্যবস্থা আছে। সেগুলোতে ক্যানোলা যুক্ত করে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছে।