মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন, উত্তরা প্রতিনিধি: আর্মির কমিশন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে একাধিক ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে তুরাগ থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন (১) মোসাঃ নুরজাহান (৪৫), স্বামী- মৃত জসিম উদ্দিন ও (২) মোঃ আব্দুল জলিল (৩২), পিতা- মোঃ আকবর আলী। গ্রেফকৃতরা উভয়েই তুরাগের রাজবাড়ী চৌরাস্তা এলাকায় বাসা ভাড়া করে থাকতেন।
জানা যায়, আটককৃতরা নিজেদেরকে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মোঃ জুয়েল ইসলাম পাভেল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে সাত লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে নির্দিষ্ট তারিখে চাকুরীর কোন ব্যবস্থা করতে না পারলে ভুক্তভোগী জুয়েল ইসলাম পাভেল জানতে পারে যে উপরোক্ত ব্যক্তিদ্বয় সেনাবাহিনীতে চাকুরী দেয়ার নাম করে অন্যান্যদের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে গত ২৪/০৬/২০২০ ইং তারিখে ভুক্তভোগী তুরাগ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করলে সেটিকে এজহারভুক্ত করে তুরাগ থানা কর্তৃপক্ষ। যার মামলা নং- ১৫, তাং- ২৫/০৬/২০২০।
মামলার প্রেক্ষিতে তুরাগ থানার এসআই নিয়াজ মোহাম্মদ শরীফের নেতৃত্বে এএসআই আশিফুর রহমান ও সঙ্গীয় ফোর্সকে সাথে নিয়ে অভিযুক্ত মোসাঃ নুরজাহান ও মোঃ আব্দুল জলিলকে বুধবার দিবাগত রাত ১টায় গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ নুরুল মোত্তাকিন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদেরকে গ্রেফতারপূর্বক জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে, এজহার সূত্রে জানা যায়, তুরাগ থানাধীন রাজাবাড়ী চৌরাস্থায় আল্লাহর দান ইলেকট্রনিক্স এন্ড ফার্নিচারের মালিক মোঃ আব্দুল জলিল ও একই এলাকার বাসিন্দা মোসাঃ নুরজাহান ভুক্তভোগী মোঃ জুয়েল ইসলাম পাভেলের চাচাতো ভাই মোঃ জিনারুল ইসলামকে আর্মির কমিশন পদে চাকরী দেয়ার নাম করে নগদ চার লক্ষ পঁচাশি হাজার টাকা ও বিকাশের মারফত দুই লক্ষ পনের হাজার টাকা আদায় করে। এ কাজে মোসাঃ নুরজাহান নিজেকে মোছাঃ শারমিন আক্তার মুন ওরফে নাছরিন (ছদ্মনাম) পরিচয় দিয়ে পাভেল ও তার পরিবারের কাছ থেকে এসব টাকা হাতিয়ে নেয়। পরবর্তীতে চাকরির নির্দিষ্ট তারিখে পরীক্ষার কার্ড ও অন্যান্য কাগজপত্র দিতে না পারায় মোসাঃ নুরজাহান ও আব্দুল জলিলের প্রতি পাভেলের সন্দেহ হয়। মোঃ জুয়েল ইসলাম পাভেল আরও জানতে পারে যে, অপর এক ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই ব্যক্তিকেও ঘোরাচ্ছে জলিল ও নুরজাহান চক্র। শেষ পর্যন্ত সন্দেহ প্রমাণিত হওয়ায় মোঃ জুয়েল ইসলাম পাভেল তুরাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তদের গ্রেফতারের পর স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতারক চক্রের মূল হোতা মোসাঃ নুরজাহানের গতিবিধি বেশ সন্দেহজনক ছিল। সাধারণ মানুষকে নানাভাবে চাকরির আশ্বাস দেওয়ায় তার নিকট প্রতিদিনই অনেক ভুক্তভোগীর আসা যাওয়া ছিল।