হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ বিপুল পরিমানে সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকালে লালমনিরহাট শহরের ডাইভারপাড়া এলাকায় একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ এসব সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। এসময় বাসার মালিক আব্দুর রাজ্জাক রেজা ও তার স্ত্রী নিলুফার ইয়াসমিনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক আব্দুর রাজ্জাক রেজা ওই এলাকার মমতাজ উদ্দিনের পুত্র বলে পুলিশ জানিয়েছে এবং তিনি ড্রাইভারপাড়া এলাকায় ভাড়া নেয়া একটি রেলওয়ে কোয়্র্টাারে বসবাস করে আসছেন।
উদ্ধার হওয়া এসব সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল, বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সিভিল সার্জনের অফিসের স্টোররুম থেকে পাচার হয়ে তাদের কাছে আসে।
আটক দম্পতি পুলিশ ও সাংবাদিকদের এ তথ্য দিয়ে জানান, বিগত আট বছর ধরে তারা পাচার হওয়া সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি বিভিন্ন মেডিসিন ডিসপেনশারীর মাধ্যমে বিক্রি করে আসছেন। কারো নাম উল্লেখ্য না করে তারা পুলিশকে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন সরকারি এসব ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি পাচার করে তাদের মাধ্যমে কালো বাজারে বিক্রি করে আসছে।
অভিযান পরিচালনাকারি পুলিশ কর্মকর্তা লালমনিরহাট সদর থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমানে সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদিসহ স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেন। উদ্ধার হওয়া মেডিকেল সরঞ্জামাদির মধ্যে ওজন মাপার মেশিন, ডায়াবেটিকস চেক আপ মেশিন, মাস্কস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, প্রেসার মাপার মেশিন রয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের উপস্থিতিতে থানায় জব্দ হওয়া ঔ্ষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি সিজার লিস্ট করে মুল্য নির্ধারেন করা হচ্ছে।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি ছয়মাস ধরে হাসপাতালের এ দায়িত্ব পালন করছেন এবং দায়িত্ব পালনকালে হাসপাতালের স্টোরকে থেকে কোন ঔষধ চুরি বা পাচারের ঘটনা ঘটেনি।যেহেতু সরকারি ঔষধ উদ্ধার করা হয়েছে তাই তিনি পুঙ্খানুপুঙ্খানুভাবে হাসপাতালের ঔষধ স্টোর ভালোভাবে তল্লাশি করবেন এবং কোন ঘাটতির ঘটনা থাকলে সংশ্লিষ্ঠ স্টাফের বিরুদ্ধে অবশ্যই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা: নির্মলেন্দু রায় জানান, অবশ্যই স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন এই সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত রয়েছে। পুলিশ সরকারি ঔষধ, মেডিকেল সরঞ্জামাদিসহ আটক দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে সিন্ডিকেটে জড়িত স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজনের নাম বের করে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়ে তিনি বলেন, জড়িত স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীদের নাম পেলে তিনি বিভাগীয় ব্যবস্থা নিবেন।
লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ি সরকারি ঔষধ ও মেডিকেল সরঞ্জামাদি পাচার ও কালোবাজারে বাজারজাতকারি সিন্ডিকেটের অন্যদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালাবেন।