রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটী ইউনিয়নের আবদার গ্রামে মা ও ভাই বোনদের সাথে হত্যার শিকার এসএসসি পরীক্ষার্থী নূরা সাবরিনা জিপিএ ৫ পেয়েছে।
তার রোল নাম্বার ১২৩২২৩। সে স্থানীয় এইচএকে একাডেমী এন্ড স্কুল থেকে ২০২০ সনে অনুষ্ঠিত এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।
এইচএকে একাডেমী এন্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহীন সুলতানা জানান, রোববার দুপুর ১টার দিকে নূরা সাবরিনার চাচা জাহিদ হাসান আরিফ ফলাফল নিতে বিদ্যালয়ে আসেন। তিনি এসময় শিক্ষক ও অভিভাবকদের সামনে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। কান্নায় তিনি কোনো কথাও বলতে পারেননি। শিক্ষক-অভিভাবকসহ বিদ্যালয়ে উপস্থিত সকলেই কান্না করে আফসোস ও দোষীদের শাস্তি দাবী করেন।
প্রধান শিক্ষক জানান, ওই বিদ্যালয় থেকে রেজিস্ট্রেশন করার অনুমতি পাওয়া যায়নি। এটি প্রক্রিয়াধীন। তিনি পার্শ্ববর্তী তেলিহাটী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন করে পরীক্ষার সুযোগ দেয়া হয়। তার বিদ্যালয়ের একটি বিভাগ (বিজ্ঞান) থেকে গত ১৫ বছর যাবত কেবল বিজ্ঞান বিভাগ থেকে শিক্ষার্থীরা অন্য বিদ্যালয়ের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছে। এ বছর মোট ৩৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৮ জন জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। পাশের হার শতভাগ। হত্যাকান্ডের শিকার নূরা সাবরিনা মেধার পাশাপাশি অত্যন্ত বিনয়ী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত ছিল।
নূরা সাবরিনার চাচা জাহিদ হাসান আরিফ কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলটি-ই আমরা পেলাম। কিন্তু যার ফলাফল কেবল সে ও তার মা, ভাই-বোন কেউ নেই। এ হত্যাকান্ড এবং ফলাফল আমাদের পরিবারের বেঁচে থাকা প্রত্যেক সদস্য বিষাদের স্মৃতি আমৃত্যু বহন করবে।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গ্রামে মালোশিয়া প্রবাসী রেদোয়ান হোসেন কাজলের বাড়ি থেকে স্ত্রী ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক স্মৃতি আক্তার ফাতেমা (৪৫), তার বড় মেয়ে সাবরিনা সুলতানা নূরা (১৬), ছোট মেয়ে হাওয়ারিন (১২) ও প্রতিবন্ধী ছেলে ফাদিলের (৮) জবাই করা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ২২ এপ্রিল বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময় দুর্বৃত্তরা চারজনকে গলা কেটে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় প্রবাসে অবস্থানকারী গৃহকর্তা রেদোয়ান হোসেন কাজলের বাবা মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) একজন ও র্যাব-১ এর সদস্যরা পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করলে তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।