প্রধানমন্ত্রীর দেয়া নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় অসঙ্গতি থাকায় তা সংশোধন করে নতুন করে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। রোববার মধ্যে সংশোধিত এ তালিকা পাঠাতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (ত্রাণ-১) আবুল খায়ের মো. মারুফ হাসান এ তথ্য জানিয়েছেন।
ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাস সংকটে ক্ষতিগ্রস্তদের এই নগদ অর্থ সহায়তা দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু শুরুতেই তালিকা নিয়ে বিভিন্ন অনিয়ম-অসঙ্গিতি দেখা দেয়।
মারুফ হাসান বলেন, কিছু তালিকায় একই মোবাইল নম্বর একাধিকবার থাকায় তালিকা সংশোধনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ১৭ই মে’র মধ্যে তালিকা সংশোধন করতে বলা হয়েছে। এরপর উপকারভোগীদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হবে।
প্রতি জেলার পাঁচজন সুবিধাভোগীর মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে আড়াই হাজার করে টাকা পাঠিয়ে গত বৃহস্পতিবার এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এরপর কোনো কোনো ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যের মোবাইল নম্বর ২০-৩০ জন বা তারও বেশি উপকারভোগীর নামের পাশে থাকার বিষয়টি প্রকাশিত হয়।
এ নিয়ে গত দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
উপসচিব মারুফ হাসান জানান, প্রধানমন্ত্রী যে কয়েকজনের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছিলেন তার বাইরে এখনও অন্য সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানো হয়নি।
ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারকে নগদ সহায়তা দিতে যে তালিকা এসেছিল, তার ১৬ শতাংশে একই মোবাইল নম্বর একাধিকবার ব্যবহার করা রয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, টাকা আত্মসাতের জন্য এটা করা হয়নি। কোনো কোনো তালিকায় একই মোবাইল নম্বর ২০০ বারও আছে। কারণ তালিকা করার সময় যাদের মোবাইল নম্বর পাওয়া যায়নি তাদের নামের পাশে যারা তালিকা করেছেন তাদের মোবাইল নম্বর বারবার বসিয়ে দিয়েছেন। আইসিটি বিভাগ যাচাই করে দেখেছে তালিকার ১৫-১৬ শতাংশ সুবিধাভোগীর নামের সঙ্গে একই মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন এভাবে টাকা পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। কারণ কোনো মোবাইল নম্বরে একবার টাকা পাঠানোর পরে সিস্টেমই ওই নম্বরে আর টাকা পাঠাতে দেবে না। যাদের মোবাইল নেই তাদের সরকারের পক্ষ থেকে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দিয়ে সেখানে টাকা পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
মন্ত্রণালয় থেকে সংশোধিত তালিকা চেয়ে যে চিঠি দেয়া হয়েছে সেখানে লেখা হয়েছে, ‘মুজিব বর্ষে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লক্ষ পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান কর্মসূচি সংক্রান্ত নির্দেশিকায় ভাসমান মানুষ, নির্মাণ শ্রমিক, গণপরিবহন শ্রমিক, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রেলওয়ে কুলি, মজুর, ঘাটশ্রমিক, নরসুন্দর, দিনমজুর, রিকশা/ভ্যানগাড়িচালক এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের লোকসহ মানবিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য পরিবারবর্গ এবং যারা দৈনিক আয়ের ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করে এ রকম জনগোষ্ঠী অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এই পেশাভিত্তিক লোকজন যারা বাদ পড়েছেন তাদের অন্তর্ভুক্ত করে তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে।