মো: সাজ্জাত হোসেন, কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি: কালীগঞ্জ পৌর ৫ নং ওয়ার্ডের বালীগাঁও মধ্যপাড়া জামে মসজিদের কতক জমি জোর করে দখলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উক্ত অভিযোগ উঠে এসেছে বালীগাঁও (মধ্যপাড়া) গ্রামের মোঃ কামালউদ্দিন গংদের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে বালীগাঁও মধ্যপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ নাজমুল হক বলেন, কালীগঞ্জ পৌর ০৫ নং ওয়ার্ড বালীগাঁও (মধ্যপাড়া) গ্রামে আমাদের মসজিদ অবস্থিত। আর.এস পর্চানুসারে বালীগাঁও মৌজাস্থিত “ক” তপসিলের আর.এস ০১ নং খতিয়ানের আর.এস ১৬৭৯ নং দাগে সরকারি খাস জমির ২৫ শতাংশ জমির আর.এস রেকর্ডিয় মালিক “বালীগাঁও মধ্যপাড়া জামে মসজিদ”। কিন্তু মসজিদের দখলে রয়েছে মাত্র ১৪ শতাংশ জমি। মসজিদের অবশিষ্ট্য ১১ শতাংশ জমি বালীগাঁও (মধ্যপাড়া) গ্রামের মোঃ কামালউদ্দিন এবং তার ৬ ছেলে- ১. ইকবাল হোসেন ২. কাউছার ৩. লিটন ৪. সোহেল ৫. মোতাহার ওরফে (মন্তু) ও ৬. ইলিয়াছ দীর্ঘদিন যাবৎ জোর পূর্বক জবর দখল করে রেখেছেন।
এ সম্পর্কে বালীগাঁও মধ্যপাড়া জামে মসজিদ কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শাহিন ডাক বলেন, আর.এস পর্চায় বালীগাঁও মৌজার “ক” তপসিলের আর.এস ০১ নং খতিয়ানের আর.এস ১৬৭৯ নং দাগে সরকারি খাস জমি হতে, আমাদের মসজিদের নামে ২৫ শতাংশ জমি রয়েছে। কিন্তু মসজিদের দখলে আছে মাত্র ১৪ শতাংশ জমি। মসজিদের বাকি ১১ শতাংশ জমি বালীগাঁও (মধ্যপাড়া) গ্রামের মোঃ কামালউদ্দিন এবং তার ৬ ছেলে- ১. ইকবাল হোসেন ২. কাউছার ৩. লিটন ৪. সোহেল ৫. মোতাহার ওরফে (মন্তু) ও ৬. ইলিয়াছ দীর্ঘদিন দরে জোর করে দখল করে রেখেছেন।
তিনি আরো জানান, আমাদের সামাজিক মসজিদের অধিনে ২৮০ টি পরিবার রয়েছে। প্রতিটা পরিবারের মধ্যেই একাধিক সদস্য আছে। মসজিদের ভিতরে জায়গা স্বল্পতার কারণে একসাথে জামায়াতের সহিত নামাজ আদায় করা যায় না। এমতাবস্থায় জমি স্বল্পতার কারণে মসজিদ বর করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মসজিদের অবশিষ্ট ১১ শতাংশ জমি ফিরে পেলে, আমরা নতুন মসজিদ নির্মাণ করে একসাথে জামায়াতের সহিত নামাজ আদায় করতে পারবো।
উক্ত মসজিদের বয়স্ক মুসুল্লিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মুলুল্লিরা তাদের বাবা ও দাদার কাছে জানতে পেরেছে এই মসজিদটি প্রায় ১৫০ বছর পূর্বে স্থাপন করা হয়েছে। মসজিদের কতক জমি মোঃ কামালউদ্দিন গং প্রায় ৪০ বছর দরে এবং কতক জমি প্রায় ১৭ বছর দরে জোরে দখল করে নিয়েছেন।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্যরা ও মুসুল্লিরা অভিযুক্ত মোঃ কামালউদ্দিন গংদের কাছে মসজিদের জমি ফেরৎ চাইতে গেলে, মোঃ কামালউদ্দিনের ৬ ছেলে- ইকবাল হোসেন, কাউছার, লিটন, সোহেল, মোতাহার ওরফে (মন্তু) ও ইলিয়াছ একত্রিত হয়ে পরিচালনা কমিটির সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ করা সহ বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাসানোর হুমকি দিয়েছেন বলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
অপর দিকে অভিযুক্তরা গাজীপুরে বিজ্ঞ আদালতে (এ.ডি.এম কোর্টে) একটি মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালত (এ.ডি.এম কোর্ট) এই জমির উপর ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে আদালতের নির্দেশে তৎকালীন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মু. মুশফিকুর রহমান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সোহাগ হোসেন সরেজমিনে গিয়ে মসজিদের জমি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি অভিযুক্ত মোঃ কামালউদ্দিন গংদের এই জমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করতে নিষেধ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইকবাল হোসেন বলেন, আমরা মসজিদের কোন জমি দখল করি নাই। আর.এস রেকর্ডে ভুল বসত আমাদের জমি সরকারি খাস জমি হিসাবে এই মসজিদের নামে রেকর্ড ভুক্ত হয়েছে। এজন্য আমরা গাজীপুরে জজ কোর্টে রেকর্ড সংশোধনী মামলা দায়ের করে আমাদের পক্ষে রায় পেয়েছি।
এই মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে বালীগাঁও মধ্যপাড়া জামে মসজিদ কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ শাহিন ডাক বলেন, অভিযুক্তরা গাজীপুর জজ কোর্টে রেকর্ড সংশোধনী যে মামলা দায়ের করেছিলো, আমরা মসজিদ কমিটির কেউ এ বিষয়ে অভগত না। ঐশ্বরিক কারণে মসজিদ কমিটির কাছে কোর্ট থেকে কোন নুটিশ জারি হয়ে আসেনি।
এ বিষয়ে বর্তমান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোঃ শিবলী সাদিককে একাধিক বার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।