বলিউডে আবার ইন্দ্রপতন। বুধবার ইরফান খানের প্রয়াণের পর বৃহস্পতিবার সকালে চলে গেলেন বলিউডের সর্বকালের অন্যতম সেরা রোমান্টিক নায়ক ঋষি কাপুর। বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর। ইরফানের মতোই ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। দু’বছর আমেরিকার নিউ ইয়র্কে চিকিৎসা চালানোর পর তিনি গত সেপ্টেম্বরে ভারতে ফিরেছিলেন। সুস্থ ছিলেন। করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি গত ২ এপ্রিল মুম্বাইয়ে একটি অনুষ্ঠানে মানুষের মনে সাহসও জুগিয়েছিলেন। কেউ তখন ভাবেনি যে মাস ফুরোবার আগেই ইতিহাস হয়ে যাবেন ঋষি।
বলিউড অভিনেতার জন্ম ফিল্মি পরিবারেই। বাবা ছিলেন প্রবাদপ্রতিম রাজ কাপুর। স্ত্রী বলিউডে তাঁর বহু ছবির নায়িকা নিতু সিং। পুত্র এখনকার বলিউড তারকা রণবীর কাপুর। বৃহস্পতিবার সকালে অমিতাভ বচ্চনের টুইটে মানুষ প্রথম জানতে পারে যে ঋষি কাপুর আর নেই। টুইটে অমিতাভ লেখেন, আমি ধংস হয়ে গেলাম। ঋষি চলে গেলেন। এরপর ঋষির দাদা রণধীর কাপুর একটি বিবৃতিতে সকাল নটা আটত্রিশ মিনিটে ঋষির মৃত্যুসংবাদ জানান। ঋষির মৃত্যুতে বলিউড শুধু নয়, গোটা দেশেই শোকের ছায়া নেমে আসে। বলিউডের বিভিন্ন তারকা গভীর শোক প্রকাশ করেন তাঁর মৃত্যুতে। ঋষির মৃত্যুর সময় স্ত্রী নিতু, ছেলে রণবীর এবং মেয়ে ঋদ্ধিমা তাঁর পাশেই ছিলেন। পাঁচ দশকের বেশি সময় ঋষি জড়িয়ে ছিলেন সিনেমা শিল্পের সঙ্গে। শিশুশিল্পী হিসেবে হোম প্রোডাকশনের ছবির গান পেয়ার হুয়া একরার হুয়ার সঙ্গে তাঁর অভিনয় মানুষকে আবিষ্ট করেছিল। ঋষি তাঁর পাঁচ দশকের অভিনয় জীবনে বহু ছবিতে অভিনয় করেছেন। কিন্তু যদি তিনি তা নাও করতেন মানুষ তাঁকে মনে রাখতো হয়তো দুটি ছবির অভিনয়ের জন্যে, ববি এবং মেরা নাম জোকার। দুটি ছবির নির্মাতা ছিলেন রাজ কাপুর। কিশোর ভীরু প্রেমের অভিব্যক্তি ঋষি ফুটিয়ে তুলেছিলেন তাঁর অভিনয়ের মাধ্যমে। মেরা নাম জোকার ছবিতে ঋষি ফুটিয়ে তুলেছিলেন এক জীবনবোধ , এক জীবনদর্শনকে। সাত এবং আটের দশকে বড় হওয়া কিশোররা কেউ তাঁর প্রভাবমুক্ত হতে পারেনি। ঋষির ডাকনাম ছিল চিন্টু। বলিউড তাঁকে এই নামেই চিনতো। চিন্টুর প্রয়াণে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হলো। নেটফ্লিক্স এ সম্প্রতি বডি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঋষি। তাঁর ‘বডি ‘ আজ পঞ্চভূতে বিলীন হয়ে গেল। রাজ কাপুর এর মেরা নাম জোকারে একটি গান ছিল, জিনা হিয়া ময়না হিয়া, ইসকা সিয়া জানা কাহা..
সত্যিই, মৃত্যু অমোঘ, অনিবার্য। ঋষি কাপুরের প্রয়াণ যেন সেই কথাকে ফের মনে করিয়ে দিল।