রাঙ্গামাটি: করোনাভাইরাসের আতঙ্কে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন রাঙ্গামাটির পাহাড়ি একটি পরিবারের সাত সদস্য। ইতোমধ্যে সেখানে তারা নয়দিন পার করে ফেলেছেন তারা। বাকি আছে আরো ১৩ দিন! রোদ-ঝড়-বৃষ্টি সবকিছু মাথায় নিয়ে কঠিন সময় পার করছেন তারা। ঘটনা রাঙ্গামাটির লংগদুর কাট্টলী মৌজার বরকলক গ্রামের। সেখানে একটি পাহাড়ি ঘোনায় কোয়ারেন্টাইনে আছেন তারা। কিন্তু বাড়ি ছেড়ে কেন ইঞ্জিন নৌকায় কোয়ারেন্টাইন কাটাতে হচ্ছে তাদের?
সেই গল্প শোনার আগে জানা প্রয়োজন কোয়ারেন্টাইনে থাকা এই সাতজন কারা?
তারা হলেন একই পরিবারের চার সদস্য। দুই ভাই-বোন আর মা-বাবা। বাকি তিনজন হলেন দুই ভাই-বোনের বান্ধবী।
পরিবারের কর্তা জানান, দিন কয়েক আগেই তার দুই ছেলে-মেয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে তিন বান্ধবী নিয়ে গ্রামের বাড়ি আসেন। কিন্তু করোনার কারণে তাদের নিজ গ্রামে যেতে দেয়া হয়নি। তাই গ্রামবাসীর পরামর্শে তাদের ইঞ্জিন নৌকায় কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। ছেলে-মেয়েকে এই অবস্থায় রেখে যেতে চাননি মা-বাবা। এই পাচঁজনের সাথে তাই স্বেচ্ছ্বাস কোয়ারেন্টাইনে আছেন তারাও। গ্রামবাসী তাদের এই কোয়ারেন্টাইনের সময় বেধে দিয়েছেন ২২ দিন। ইতোমধ্যে নয়দিন পার হয়েছে।
কোয়ারেন্টাইনে থাকা মেয়ের দুই বান্ধবীদের একজনের বাড়ি রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা এবং অন্যজনের বাড়ি বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের পানছড়ি গ্রামে। তারা একসাথে চট্টগ্রামে থাকতেন।
সেখানে খুব কঠিন সময় কাটছে তাদের। কারণ পুরো সময়টা তাদের নৌকায়ই কাটাতে হচ্ছে। রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম- সবকিছুই চলছে সেখানে। কিন্তু কোনো উপায় নেই, নিয়ম মানতে তো হবেই।
এই সময়টায় খাবার পানির সঙ্কটে ভুগছিলেন তারা। তাই হ্রদের তীরে কুয়া খুঁড়ে, সেখান থেকে খাবার পানি সংগ্রহ করছেন। অস্থায়ী টয়লেট বানিয়েছেন ঝোপঝাড়ে।
তবে স্বজনরা নিয়মিত খাবার সরবরাহ করছেন। কিন্তু ওষুধপত্র কিছুই নেই।
গ্রামের মুরুব্বীরা প্রথম দিকে বলেছিলেন, কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে ১৪ দিন। কিন্তু পরে সময় বাড়িয়ে করেছেন ২২ দিন! ইতোমধ্যে নয়দিন কাটিয়েছেন, আরো বাকি আছে ১৩ দিন! এই দীর্ঘ সময় তারা কীভাবে কাটাবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় কাটছে প্রতিটি ক্ষণ।