করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই রোববার থেকে ধাপে ধাপে খুলছে তৈরি পোশাক কারখানা। আজ শনিবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইতে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর পর সন্ধ্যায় গার্মেন্টস কারখানা খোলার বিষয়টি অবহিত করে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি পাঠিয়েছেন। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোশাক শিল্প মালিকদের অপর সংগঠন বিকেএমইএ। এর পর শ্রম মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য বিধি মেনে কারখানা চালু করার জন্য একটি নির্দেশনা জারি করে।
অবশ্য আপতত দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিক না আনতে সদস্য কারখানাকে পরামর্শ দিয়েছে পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। আশপাশে বসবাসরত শ্রমিকদের দিয়ে সীমিতভাবে উৎপাদনকাজ চালাতে নির্দেশনা দিয়েছে তারা।
বিজিএমইএ’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামীকাল রোববার ও সোমবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা ছাড়াও নারায়ণগঞ্জ এলাকার নিটিং, ডায়িং ও স্যাম্পলিংয়ের কারখানা চালু হবে। ২৮ থেকে ৩০শে এপ্রিল আশুলিয়া, সাভার, ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কারখানা, ৩০শে এপ্রিল রূপগঞ্জ, নরসিংদী, কাঁচপুর এলাকা, ২ ও ৩রা মে গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার কারখানা চালু করা হবে।
কারখানা খোলার ক্ষেত্রে শুরুতে উৎপাদন ক্ষমতার ৩০ শতাংশ চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।
কারখানার আশে পাশে থাকা শ্রমিকদের নিয়ে কারখানা চালু এবং এপ্রিল মাসে সকল শ্রমিককে বেতন পরিশোধের অনুরোধ জানায় বিজেএমইএ। কারখানা এলাকার থেকে অনেক দূরে থাকা শ্রমিকদের এখন কর্মস্থলে না ডাকা এবং কর্মী ছাঁটাই না করার অনুরোধ জানানো হয়।
বিজেএমইএ আরো জানায়, প্রটোকল অনুসারে কারখানা খোলা না হলে এবং শ্রমিকরা সার্বিক সহায়তা ছাড়া ঢাকায় প্রবেশ করলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কারখানাগুলোকে সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে না।
জানা যায়, সরকারের অনুমতি পাওয়ার পর কারখানা চালু করতে কাজ শুরু করে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। আজ শনিবার বিকেএমইএ তাদের সব সদস্য কারখানাকে স্যাম্পল, নিটিং ও ডায়িং সেকশন আগামীকাল রোববার থেকে চালু করার নির্দেশনা দেয়।
বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল বলেন, ঢাকার কারখানাগুলো কাল রোববার খুলবে। এর পর ধাপে ধাপে চালু হবে। তিনি বলেন, লকডাউন থাকা অবস্থায় ঢাকার বাহির থেকে শ্রমিক না আনতে আমরা কারখানাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছি। আর কারখানা খোলার আগে সদস্যদের অবশ্যই বিজিএমইএ ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমোদন নিতে হবে। কারখানা চালু করার বিষয়ে একটি গাইডলাইন সব সদস্য কারখানাকে দেয়া হয়েছে।
বিকেএমইএর সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘স্যাম্পল, নিটিং ও ডায়িং সেকশন কাল থেকে চালু করতে আমরা সব সদস্য কারখানাকে নির্দেশনা দিয়েছি। এসব সেকশনে খুবই কমসংখ্যক শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। ফলে খুব সহজেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাবে। অন্যদিকে সুইংসহ (সেলাই) অন্যান্য সেকশন ১ মের পর পরিস্থিতি বুঝে চালু করতে পারবে কারখানাগুলো। তবে জরুরি রপ্তানি ক্রয়াদেশের বিষয় থাকলে সংশ্লিষ্ট কারখানা তাদের প্রয়োজনীয় সেকশনগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালাতে পারবে।