ডেস্ক: ভারতের অনলাইন এনডিটিভির এক খবরে বলা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশির ভাগ সদস্যকে হত্যাকারী রিসালদার মোসলেহউদ্দিনকে শনাক্ত করতে গোয়েন্দা কর্মকা- পরিচালনা করা হয় কঠোর গোপনীয়তায়। পশ্চিমবঙ্গ থেকে তাকে আটক করা হলেও ভারতের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ প্রক্রিয়ায় যে গোপনীয়তা রক্ষা করে, সে সম্পর্কে অবহিত ছিল না পশ্চিমবঙ্গের পুলিশও। এসব তথ্যের পিছনে সূত্রের উদ্ধৃতি দেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই অপারেশনের খবর প্রকাশ হয় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক ওই ব্যক্তির ছবি ও ভিডিও নিয়ে। কারণ, বিস্তর সংশয় দেখা দেয় ছবির ব্যক্তি মোসলেহউদ্দিন কিনা তা নিয়ে। বলা হয়, ছবির ওই ব্যক্তি কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। কিন্তু তাকে শনাক্ত করতে বাংলাদেশ উচ্চমাত্রার ‘সফিসটিকেটেড ফেসিয়াল রিকগনিশন’ প্রযুুক্তি ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে তারা তার পরিচয় শনাক্ত করার পর এই পলাতক খুনিকে মোসলেহউদ্দিন হিসেবে নিশ্চিত হয় ভারতের গোয়েন্দারা। তারপরই তাকে হস্তান্তর করা হয়।
তবে এ বিষয়ে এখনও বাংলাদেশ বা ভারতের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয় নি।
‘ইন্ডিয়া হ্যান্ডস মুজিবুর রহমান এসাসিন হাইডিং ইন বেঙ্গল টু ঢাকা: রিপোর্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এনটিভির সাংবাদিক মণিদীপা ব্যানার্জী লিখেছেন, ৩০ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো প্রতিবেশী বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের মূল খুনিদের অন্যতম আরো একজনকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিয়েছে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এর আগে ফেব্রুয়ারিতে পলাতক অন্যজনকে ঢাকার হাতে তুলে দিয়েছে নয়া দিল্লি। শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু নামে জনপ্রিয়। তিনি বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টে ঢাকায় নিজের বাসায় তাকে ও তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এনডিটিভি আরো লিখেছে, গত ১২ই এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক পলাতক ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করেছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন রিপোর্ট অনুযায়ী, মুজিব হত্যাকারী দ্বিতীয় পলাতক রিসালদার মোসলেহউদ্দিনকে সোমবার সন্ধ্যায় একটি অজ্ঞাত সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। শেখ মুজিবকে হত্যাকারীদের অন্যতম বলে বিশ^াস করা হয় তাকে। এই দুই ঘাতক দুই দশকের বেশি সময় বসবাস করছিল পশ্চিমবঙ্গে। ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে দক্ষিণ কলকাতার বাসার কাছ থেকে তুলে নেয়া হয় আবদুল মাজেদকে। অন্যদিকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে বনগাঁও থেকে আটক করা হয়েছে মোসলেহউদ্দিনকে। ভারতে একজন শিক্ষক হিসেবে দিন গুজরান করছিল আবদুল মাজেদ। অন্যদিকে হার্বাল মেডিসিনের একটি ছোট দোকান চালাতো মোসলেহউদ্দিন। তাকে গ্রেপ্তারের খবরটি প্রথম প্রকাশ করে ইস্টার্নলিঙ্কস ডট কম। তাতে বলা হয়, মোসলেহউদ্দিন কোথায় আছে, ফাঁসি দেয়ার আগে তা প্রকাশ করেছে মাজেদ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় অভিযুক্ত কমপক্ষে এক ডজন অপরাধীকে ২০০৯ সালের দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি ঘোষণা করে বাংলাদেশ। এই অভিযুক্তদের মধ্যে ছিল ওই দুই অপরাধী। অভিযুক্তদের মধ্যে ২০১০ সালে ৫ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। বাকি চারজন এখনও পলাতক।