হাটহাজারী (চট্টগ্রাম): সুস্থ ব্যক্তিদের জন্য মসজিদে জুমা, জামাত ও তারাবীহতে উপস্থিতি বাধামুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন আল্লামা আহমদ শফী ও হাইয়াতুল উলইয়ার শীর্ষ কর্মকর্তা উলামায়ে কেরাম।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, রমাজানুল মুবারক অত্যাসন্ন। এ মাস রহমত ও নাজাতের মাস। করোনাসহ সমস্ত বালা-মুসিবত থেকে মুক্তির জন্য এ মাসের সদ্ব্যবহার একান্ত জরুরি।
তাই নিন্মোক্ত শর্তসমূহ মেনে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রতি শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফি ও দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরাম সুস্থ ব্যক্তিদের জুম‘আ, পাঁচ ওয়াক্তের জামাত ও তারাবীহ আদায়ের জন্য নামাযের সময় সকল মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান জানায়: মসজিদে কার্পেট, জায়নামাজ বা গালিচা বিছানো যাবে না।
জুমার বয়ান, খুতবা, জামাত ও দু‘আ সংক্ষিপ্ত করা হবে এবং নামাযের আগে বা পরে মসজিদের ভেতরে বা সামনে জড়ো হওয়া যাবে না।
পঞ্চাশোর্ধ বয়সের মুসল্লি এবং ১২/১৩ বছর পর্যন্ত বয়সের বালক মসজিদে আসবে না। যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে, যারা আক্রান্ত দেশ ও অ ল থেকে এসেছেন কিংবা যারা উক্তরূপ মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন তারা মসজিদে আসবে না।
যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত এবং যারা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত তারা মসজিদে আসবেন না। যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তারাও আসবেন না। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদকে জীবাণুনাশক, স্যানেটাইজ ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে এবং ওযুখানায় অবশ্যই সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখবে।
মুসল্লিদের দু‘জনের মাঝে অন্তত দুই ফুট পরিমাণ জায়গা ফাঁক রেখে দাঁড়াতে হবে। বাসা থেকে অজু করে যেতে হবে এবং হাত ও পা ভালোভাবে ধুয়ে মুছে যেতে হবে। বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে।
পরস্পর হাত মিলানো ও আলিঙ্গন থেকে বিরত থাকতে হবে।
সম্মিলিত ইফতারের আয়োজন করা যাবে না। মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম সাহেবদের প্রশাসনের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখার জন্য প্রতি মসজিদে একটি করে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করতে হবে।
এ সব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে কিংবা কোনো এলাকায় আক্রান্ত সংখ্যা অস্বাভাবিক হয়ে গেলে প্রশাসন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান এই বিস্তার নিঃসন্দেহে মহান ¯্রষ্টার সীমাহীন ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। এতে মানবজাতির জন্য বিরাট পরীক্ষা ও চিন্তার খোরাক রয়েছে; জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি ও অগ্রগতি সত্তেও মানুষ কত অসহায়! তাই মানবজাতির সর্বপ্রথম করণীয় হল, নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করে মহান মালিকের শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্ব স্বীকারপূর্বক তাঁর শরণাপন্ন হওয়া এবং এই বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সকাতর প্রার্থনা করা।
একজন মুসলিমের জন্য এ অবস্থায় প্রধান করণীয় হল, সকল প্রকার গুনাহ থেকে তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত মুতাবেক জীবনযাপন করা। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফি, চেয়ারম্যান, আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ, হযরত মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, কো-চেয়ারম্যান, আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ, হযরত মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, হযরত মাওলানা মুফতি মো: ওয়াক্কাস, হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ নূরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা মাহমুদুল হাসান, হযরত মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, হযরত মাওলানা আব্দুল হামীদ (পীর সাহেব, মধুপর), হযরত মাওলানা রুহুল আমীন, হযরত মাওলানা শামসুল হক।
হযরত মাওলানা আব্দুল হালীম বুখারী, হযরত মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতী শাসমুদ্দীন জিয়া, হযরত মাওলানা মুহিব্বুল হক, হযরত মাওলানা আব্দুল বছীর, হযরত মাওলানা আরশাদ রাহমানী, হযরত মাওলানা মাহমুদুল আলম, হযরত মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, হযরত মাওলানা মোহাম্মাদ আলী, হযরত মাওলানা সাজিদুর রহমান, হযরত মাওলানা মুফতী ফয়জুল্লাহ, হযরত মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, হযরত মাওলানা মাহফুজুল হক, হযরত মাওলানা মুফতী জসীমুদ্দীন, হযরত মাওলানা আনাস মাদানী, হযরত মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, হযরত মাওলানা মুফতী নূরুল আমীন, হযরত মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব।
হযরত মাওলানা মোশতাক আহমদ, হযরত মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, হযরত মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়্যা, হযরত মাওলানা ছফিউল্লাহ, হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল, হযরত মাওলানা মুফতি আব্দুল মালেক, হযরত মাওলানা মুফতি দেলোয়ার হুসাইন, হযরত মাওলানা মুফতি মিজানুর রহমান সায়ীদ, হযরত মাওলানা মুফতি এনামুল হক, হযরত মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, হযরত মাওলানা মুফতি মাহমুদুল হাসান, হযরত মাওলানা রিজওয়ান, হযরত মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, হযরত মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, হযরত মাওলানা মাসঊদুল করীম, হযরত মাওলানা মুফতি নাজমুল হাসান, হযরত মাওলানা মুফতি ইয়াহইয়া, হযরত মাওলানা মুফতি সাইফুল ইসলাম, হযরত মাওলানা আবুল কালাম।