সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: বাংলাদেশের মোট ২২টি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে বোরো ধান কিনবেন সরকার। আর এই কৃষকের অ্যাপে ধান সংগ্রহের উপজেলাগুলোর অনুমোদন দিয়ে সোমবার (২০ই এপ্রিল) খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) এর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য, এর আগে গত আমন মৌসুমে সাতটি বিভাগের ১৬ উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে কৃষকের কাছ থেকে অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনা শুরু হয়ে এসেছিল। কিন্তু এরপরে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, “এবারের বোরো মৌসুমে অ্যাপের মাধ্যমে কৃষকের কাছ থেকে ৬৪ জেলার একটি করে উপজেলায় ধান ও ১৬ উপজেলায় (অ্যাপে আমন সংগ্রহ করা) মিলারদের কাছ থেকে চাল ক্রয় করা হবে। ”
কিন্তু বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছেন মন্ত্রণালয়। কিন্তু এই ২২ উপজেলার মধ্যে আগের ১৬টি উপজেলাও রয়েছে। ২রা এপ্রিল বোরো সংগ্রহের এই লক্ষ্যমাত্রা ও দাম নির্ধারণ করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়। এখনকার বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে ৬ লাখ টন ধান ও সাড়ে ১১ লাখ টন চাল (আতপ ও সিদ্ধ) কিনবেন সরকার।আর এরই মধ্যে মিলারদের কাছ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন চাল, ৩৫ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল ও কৃষকদের কাছ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ধান কেনা হবে।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে যে, “চলতি বোরো মৌসুমে ২২টি উপজেলায় ‘ডিজিটাল খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা ও কৃষকের অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ধান সংগ্রহ করার অনুমোদন দেওয়া হল।এই ২২টি উপজেলাগুলো হচ্ছে: টাঙ্গাইল সদর, গাজীপুর সদর,সাভার নরসিংদী সদর, মানিকগঞ্জ সদর, কিশোরগঞ্জ সদর, ময়মনসিংহ সদর, জামালপুর সদর, শেরপুর সদর, ভোলা সদর, নওগাঁ সদর, বগুড়া সদর, রংপুর সদর, দিনাজপুর সদর, ঝিনাইদহ সদর, যশোর সদর, হবিগঞ্জ সদর, মৌলভীবাজার সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও বরিশাল সদর, রাজবাড়ী সদর।
কৃষকের এই অ্যাপের লটারি ইউনিয়নভিত্তিক করতে হবে জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে যে, “করোনা পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করে আগামী ২৬ই এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সংগ্রহ কার্যক্রমে কৃষকের অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন ও ধান সরবরাহের আবেদনের সময়সীমা ৭ই মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হল। আর স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় অ্যাপের মাধ্যমে ধান কেনা যৌক্তিক মনে না হলে বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা যদি এতে বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তবে জেলা সংগ্রহ ও মনিটরিং কমিটি এ বিষয়ে বিদ্যমান নীতি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।”
এদিকে জানা গিয়েছে যে, “কৃষক তথ্য দিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করবেন। তারপর ধান বিক্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর এই আবেদন ডেটাবেজে জমা হবে। এরপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এর নেতৃত্বে উপজেলা কমিটি আবেদনকারীদের মধ্যে লটারি করবেন। আর এই লটারির মাধ্যমে যেসব কৃষক নির্বাচিত হয়ে যাবেন, তাদের অনলাইনেই বরাদ্দ দিয়ে দেওয়া হবে। এরপর কৃষক এসব বিষয়ে এসএমএস পাবেন। এছাড়াও একটা ওয়েটিং লিস্টও তৈরি করা হবে।আর নির্বাচিত কোনো কৃষক ধান না দিলে ওয়েটিং লিস্ট থেকে কৃষকদের কাছ থেকে ধান নেওয়া হবে।”