ঢাকা: প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস গ্রাস করছে গোটা বিশ্বকে। প্রতি মুহূর্তেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে মন খারাপের খবর। ভাইরাসটিতে যেই আক্রান্ত হচ্ছেন হয়তো মারা যাচ্ছেন নয়তো হাসপাতালে লড়ছেন অসুস্থতার সঙ্গে। কারো ক্ষেত্রে মিলছে মুক্তিও। তবে বিশ্বব্যাপি সে সংখ্যা খুবই কম। এ অবস্থায় দেশ ও দেশের বাইরে জরুরি সেবা দেয়া ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানগুলো ঝুঁকি নিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন।
এসব জরুরি সেবার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওষুধ দোকান। রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি অঞ্চলে পাড়ায়, মহল্লায় অলিতে গলিতে রয়েছে ফার্মেসি। এসব ফার্মেসিতে কর্মরতরা অনেকটা ঝুঁকির মুখেই। প্রতিনিয়ত নানা ধরণের রোগীরা এসে ওষুধ সংগ্রহ করছেন তাদের কাছ থেকে।
সরজমিনে দেখা গেছে, ওষুধ দোকানিদের অনেকেরই নেই ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জমাদি (পিপিই)। কেউ কেউ শুধু মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করলেও পুরোপুরি নিরাপত্তা নেই কারোরই।
রাজধানীর উত্তরবাড্ডার সাতারকুল রোডের ওষুধ দোকানি মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মাস্ক আর হ্যান্ড গ্লাভসই ব্যবহার করছি। এছাড়া আর তো কোনো সুরক্ষা সরঞ্জামাদি নেই। সারাদিন অনেক রোগী আসে। হাঁচি, কাশিসহ হরেক রকম রোগী ওষুধ নিতে আসে। তাতে সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকি। দোকানের সামনে সুতো দিয়ে ব্যারিকেড দিয়েছি। তারপরও অনেকে সেটা ভেদ করে ভেতরে চলে আসেন। কিছু বলার থাকে না। আমরা অনেক অসচেতন। কেউ বললেও শোনে না। কেউ আবার ওষুধ কিনতে এসে গল্প শুরু করেন। তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যেতে অনুরোধ করলেও হাস্যরস করে উড়িয়ে দেয়। একই এলাকার আরেক দোকানি নাম প্রকাশ না করে বলেন, পরিবারের ভরণ পোষন আর মানুষের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে দোকান খোলা রেখেছি। নয়তো বন্ধ রাখতাম। ক্রেতারা খুব অসচেতন। অনেকে মাস্ক না পরেই দোকানে আসেন। দোকানের ভেতর হাঁচি দেন। কাস্টমার বলে কিছু বলতেও পারি না। কত অনিরাপদ অবস্থায় কাজ করছি।
উত্তর বাড্ডার থানা রোডের ব্যবসায়ী রিয়াজ জানান, দোকান বন্ধ রাখার উপায় নেই। মানুষের ওষুধ লাগে। কিন্তু আমরা তো সেইফ না। এত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি যা বলে বোঝানো যাবে না। অনেক ধরণের মানুষ আসেন যারা বিভিন্ন রোগাক্রান্ত। কেউ কেউ এসে দোকানের সামনে ফিতা দিয়ে তৈরি করা ব্যারিকেড পার হয়ে ঢুকে পড়েন। খুব অস্বস্তিতে থাকি। কার কোন সমস্যা কেউ বলতে পারে না। আল্লাহই রক্ষা করবেন।
উত্তরবাড্ডার স্বাধীনতা স্মরণীর জামান নামের এক ওষুধ ব্যবসায়ী বলেন, নিরাপত্তা একদম নাই। একটা পিপিইর অনেক দাম। এত টাকা দিয়ে পিপিই কিনে দোকানে বসে সেটা পোষায় না। যতটুকু ব্যবস্থা মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস আর স্যানিটাইজার ব্যবহার করেই আছি। আর বেচাকেনাও তো খুব একটা নেই।