গাজীপুর হটস্পট হলে ঝুঁকিতে পড়বে ৭০ লাখ মানুষ! এখনি ল্যাব স্থাপন জরুরী

Slider জাতীয় টপ নিউজ বাংলার মুখোমুখি


গাজীপুর: গাজীপুর জেলায় এই পর্যন্ত মোট ৩৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলার একটি মহানগর ৩টি পৌরসভা, ৫টি উপজেলায় অবস্থিত মোট ১৩টি থানায় এই সংক্রমন শুরু হয়েছে। সবচেয়ে বেশী সংক্রমন হয়েছে কাপাসিয়া উপজেলায়। আজ নতুন করে ১২ জন আক্র্রান্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হল সামাজিক সংক্রমনের আনুষ্ঠানিকতা।

সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হল, গাজীপুর শিল্প অধ্যুষিত। আজকে বেশী আক্রান্ত শ্রীপুর একটি শিল্প এলাকা। শ্রীপুর উপজেলার উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত সংলগ্ন ময়মনিসংহ জেলার ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়েনের সিডস্টোর মাষ্টার বাড়ি এলাকায় অবস্থিত স্কয়ার মাষ্টারবাড়ি একটি শিল্প এলাকা। এই এলাকায় শ্রীপুরের অসংখ্য মানুষ কাজ করেন। আজ একই পরিবারের যে ৩জন করোনায় আক্রান্ত হলেন, তার মধ্যে একজন স্কয়ার মাষ্টারবাড়ি এলাকায় অবস্থিত একটি চায়না ফ্যাক্টরীর শ্রমিক। আক্রান্ত আরেক জন একটি ফিডমিলের কর্মচারী।

আজকের পরিসংখান যদি বিশ্লেষন করা যায়, তবে বলা যায়, শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শ্রীপুরে করোনা সংক্রমন হচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, শ্রীপুর উপজেলার যে বাড়িতে আজ ৩জন করোনায় আক্রান্ত হলেন, ওই এলাকার শত শত মানুষ স্কয়ার মাষ্টার বাড়িতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন। এই কারণে ওই এলাকা ঝুঁকিপূর্ন বলা উচিত।

এদিকে কাপাসিয়া উপজেলায় একটি কারখানায় ৬শ্রমিক একই দিনে করোনায় আক্রান্ত। তাহলে বলা যায়, ওই ফ্যাক্টরী থেকে করোনার সংক্রমন। একই সঙ্গে কাপাসিয়ায় নারায়নগঞ্জ থেকে পালিয়ে আসা একজন থেকে করোনার সংক্রমন বলেও স্থানীয়রা মনে করছেন।

কালিগঞ্জ উপজেলার দক্ষিন সীমানায় নারায়ানগঞ্জ জেলা ও পূর্ব সীমানায় নরসিংদী জেলা। সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের কারণে প্রতিনিয়িতই কালিগঞ্জের মানুষ নারায়নগঞ্জে যায় আর নারায়নগঞ্জের মানুষ কালিগঞ্জে আসে। নারায়নগঞ্জ যেহেতু বিষনভাবে আক্রান্ত হটস্পট সুতরাং গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জও ঝুঁকিপূর্ন।

গাজীপুর জেলার পশ্চিম সীমানায় অবস্থিত কালিয়াকৈর উপজেলা। টাঙ্গাইল জেলার সঙ্গে মিশে থাকায় কালিয়াকৈর উপজেলাও ঝুঁকিপূর্ন। একই সঙ্গে ঢাকার আশুলিয়া, সাভার ও ধামরাই উপজেলা কালিয়াকৈরে সঙ্গে যুক্ত।

এদিকে গাজীপুর মহানগর আরো ঝুঁকিপূর্ন। কারণ গাজীপুর মহানগরের সীমানায় জনবহুল টঙ্গী-উত্তরা, কালিগঞ্জের পূবাইল, কাপাসিয়া, কালিগঞ্জ শ্রীপুর সংযুক্ত। গাজীপুর সদর উপজেলায় অসংখ্য শিল্প প্রতিষ্ঠান থাকায় এই উপজেলাও ঝুঁকিপূর্ন। কারণ আজকে দেখা গেলো শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে করোনা ছাড়াচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাট বাজার ও বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে সকল দোকানপাট খোলা এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনী গ্রাম এলাকায় সহজে প্রবেশ না করায় জনসমাগম আগের মতই। এই জনসমাগম জিরোতে আনতে না পারলে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এতে সামাজিক সংক্রমন ব্যপক হারে বেড়ে যাবে।

এসব ছাড়াও ইতোমধ্যে গাজীপুর জেলায় করোনার উপসর্গ নিয়ে ১০জন মারা গেছেন। এর মধ্যে শ্রীপুরে ৩, কাপাসিয়ায় ২, কালিয়াকৈরে ২, কালিগেঞ্জ ১ ও গাজীপুর মহানগরে ২জন।

পরিশেষে বলা যায়, ঢাকা ও নারায়নগঞ্জের পরেই গাজীপুরের অবস্থান। আক্রান্তের ক্ষেত্রে ও আক্রমনের মাত্রা বলছে, গাজীপুরও হটস্পট হতে পারে। যদি এ রকম হয়ে যায়, তবে গাজীপুরের ৭০ লাখ মানুষ মহাবিপদে পড়তে পারেন। কারণ গাজীপুরে করোনা পরীক্ষার কোন ব্যবস্থা নেই। সুতরাং গাজীপুরকে রক্ষা করতে হলে এখনি করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন সহ সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন জরুরী হয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *