ডা. শারমিন বললেন ‘আমার বাসার বুয়াও তো অনেক সম্মানের কাজ করে’

Slider জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা


ঢাকা: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা না দিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের ছয় চিকিৎসককে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু এর মধ্যেই কয়েকজন ডাক্তার এসব অভিযোগ অস্বিকার করে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। এমন স্বিদ্ধান্তের পর হাসপাতালটির ছয় ডাক্তারের একজন জুনির কনসালটেন্ট ডা. শারমিন হোসেনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তিনি ওই ভিডিওতে বলেন , আমার তো মনে হয় বাসায় বুয়াকেও তো বিদায় করার আগ এক’শ বার চিন্তা করি যে, এই মেয়েটাকে কি ছেড়ে দিবো না দিবো না। আমার বাসার বুয়াও তো অনেক সম্মানের কাজ করে। এখানে কি আমাদের কাজ করা উচিৎ? এটা শুধু আমার কলঙ্ক না, এটা পুরো ডাক্তার সমাজের কলঙ্ক। আমাদের উচিৎ এদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো। দুই মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে তিনি বলেন , আপনারা সবাই জানেন অর্ডার বের হয়েছে , আমাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

আমি দুু:খের সঙ্গে জানাচ্ছি , কেন আমাকে সাসপেন্ড করেছে এর আগে আমি কিছুই জানি না। আমার এর আগে রোস্টার ছিলো এক তারিখ থেকে সাত তারিখ পর্যন্ত। ওই দিনগুলোতে আমি টানা ডিউটি করে সাত তারিখ রাতে ডিউটি করে সকাল আট’টায় আমি বাসায় যাই। বাসায় যাওয়রার পর আমি আর কিছু জানি না। হাসপাতালের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ ছিলো না। নয় তারিখ তত্ত্বাবদায়ক স্যার আমাকে কোনো ইনফরমেশন বা টেলিফোনে যোগাযোগ না করে আমার বিরুদ্ধে ওনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে নাম পাঠিয়েছে আমি নাকি করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে রাজি নই , ইচ্ছুক নই। এমন কথা লিখিত বা মৌখিক ভাবে আমি স্যারের কাছে অথবা কারো কাছে প্রকাশ করেছি বলে আমার জানা নেই। এখন আমি ডিউটি করে আট তারিখ আসার পরে একজন তত্ত্বাবদায়ক কিভাবে আমাকে নিয়ে একটা অর্ডার তৈরী করে স্বাস্থ্যমন্ত্রনালয়ে পাঠান? আমি নিজেও ভেবে পাচ্ছি না। যাই হোক সেখান থেকে অর্ডার হলো আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হলো। আমি যখন জানতে পারলাম তখন আমি অলরেডি সাসপেন্ড। এই অর্ডার জানার পর সঙ্গে সঙ্গে আমি স্যারের কাছে গেলাম,স্যারক বল্লাম আমি তো ডিউটি করে আট তারিখ সকালে গেলাম।আমি কি এমন কথা আপনাকে বলেছি? যে আমি ডিউটি করতে ভয় পাচ্ছি। এমন কথা বলেছি বা লিখিত ভাবে দিয়েছি? তখন তিনি দু:খ প্রকাশ করলেন। এবং ঠিক করে দেয়ার আশ্বাস দিলেন। আমি বল্লাম স্যার কিভাবে ঠিক করবেন? আমি বল্লাম আমি একটি অ্যাপ্লিকেশন করি আপনি এটা আমাকে ফরওর্য়াড দেন। তিনি বল্লেন এসব আমার কিছু লাগবে না।আমার একটি ফোনে যতেষ্ট। যাই হোক স্যারের হুমকি ধমকি খেয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে বর’কে নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গেলাম। ওখানে আমার রোস্টারের কপি, হাজিরা খাতার কপি পর্যন্ত নিয়ে দেখালাম। জিঙ্গেস করলাম কিভাবে সাসপেন্ড হয়, আমার সুস্থ মাথায় ধরছে না। আমার দোষটা কোথায়? আমাদের দেশে ডাক্তারদেও কি কোনো মূল্য নেই? আমার তো মনে হয় বাসায় বুয়াকেও তো বিদায় করার আগ এক’শ বার চিন্তা করি যে, এই মেয়েটাকে কি ছেড়ে দিবো না দিবো না।আমার বাসার বুয়াও তো অনেক সম্মানের কাজ করে। এখানে কি আমাদেও কমারা করা উচিৎ? এটা শুধু আমার কলঙ্ক না, এটা পুরো ডাক্তার সমাজের কলঙ্ক। আমাদেও উচিৎ এদেও বিরুদ্ধে রুখে দাড়ানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *