নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখার পরও খালেদা জিয়া ‘অবরুদ্ধ নন’ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে মিথ্যাচার বলে দাবি করেছে বিএনপি।
সোমবার বিকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সন্ধ্যায় টেলিফোনে গণমাধ্যমকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘মিথ্যাচার’ করা হয়েছে।
“প্রধানমন্ত্রী আজ যা বলেছেন, এটা পাগলের প্রলাপ ছাড়া আর কিছুই নয়। সারাদেশের মানুষ জানে কিভাবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পুলিশ ঘেরাও করে, গেইটে তালা লাগিয়ে এবং বালির ট্রাক রাস্তায় রেখে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।”
“নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে প্রধানমন্ত্রী জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছেন। অবস্থাটা এমন যে, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশের জনগণকে বেকুব মনে করছেন, যেন তারা কিছুই বোঝে না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এহেন মিথ্যাচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত খালেদা জিয়াকে গত ৩ মার্চ গুলশানে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করা হয়।
দুই বার নামতে বাধা পাওয়ার পর এখনও ওই কার্যালয়েই রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তবে গত কয়েকদিনে বিএনপির একাধিক নেতা এবং সমর্থক সাংবাদিক ও পেশাজীবী নেতারা তার সঙ্গে দেখা করেন।
এর মধ্যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “উনাকে কেউ অবরুদ্ধ করে নাই। উনি যদি বাসায় যেতে চান যেতে পারেন। কিন্তু উনি যাবেন না।”
ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারাবন্দি থাকার মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে নানা বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন যুগ্মমহাসচিব রিজভী।
খালেদাকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার দিন রিজভীকে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয় থেকে পুলিশ তুলে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। তবে তিনি গোপনে হাসপাতাল থেকে ‘আত্মগোপনে’ বেরিয়ে আসেন।
ফখরুলের পর বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার গ্রেপ্তার করা হয় যুগ্মমহাসচিব মো. শাহজাহান, সহ-দপ্তর সম্পাদক শামীমুর রহমান ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদকে।
শাহজাহান, শামীম, বেলালসহ আটক সব নেতার মুক্তি দাবি করেছেন রিজভী।
তিনি বলেন, “সন্ত্রাস, গুম, খুন, হত্যার মাধ্যমে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে দেশ চালাচ্ছে। কারা দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে, কারা সন্ত্রাসের হোতা, তা দেশের জনগণের কাছে পরিষ্কার।”
বিএনপি জোটের লাগাতার অবরোধের মধ্যে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জনসভায় বক্তব্যে খালেদা জিয়াকে ‘সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের নেত্রী’ আখ্যায়িত করে তাকে রুখে দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
৫ জানুয়ারির ‘ভোটারবিহীন’ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে জনগণ নেই দাবি করে রিজভী বলেন, “এভাবে তারা (সরকার) দুঃশাসনকে দীর্ঘায়িত করতে পারবে না। এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।”