আপা আমি রুমের ভিতরেই মনে হয় মারা যাব’

Slider জাতীয় টপ নিউজ


ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ‘আপা ভয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসতেছে, আমি রুমের ভিতরেই মনে হয় মারা যাব’। পরিচিত এক আইনজীবীর কাছে করোনা আক্রান্ত সন্দেহে ঘরে আবদ্ধ করে রাখা এক যুবক ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়েছে এই বার্তা। বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়ে এই যুবক আরো লিখেছে-‘ যদি আমার কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনি বলবেন আমার মৃত্যু করোনাতে হয় নাই। আর আমার পরিবারকে যেন কেউ টর্চার না করে। আমার নামে আখাউড়া এলাকাতে মিথ্যা গুজব ছড়ায়ছে আমি নাকি নারায়ণগঞ্জ থেকে গতকাল আসছি পত্রিকাতেও দিয়েছে। কিন্তু আমি ২৪/০৩/২০২০ এ আখাউড়া আসছি।’ প্রশাসন ও গ্রাম্য মেম্বার তাকে এক গ্লাস খাবার পানিও দেয়নি জানিয়ে সে আরো লিখেছে, এবিষয়গুলো তার মৃত্যুর পর ওই আইনজীবী দয়া করে সবাইকে যেন জানান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের এপিপি ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত জানান- রিয়াদ আহমেদ সাব্বির আমার একজন ক্লায়েন্ট। তার বাড়ি সরাইলে। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২২মিনিটে সে ম্যাসেঞ্জারে আমার মোবাইল নাম্বার চেয়ে বার্তা পাঠায়।

আমি সেটি দেখার পর আমার মোবাইল নাম্বার দেই। এরপর সে আজ শনিবার সকালে আমাকে ফোন দেয় এবং তার অবস্থা লিখে পাঠায়। ফোনে সে আমাকে জানায়, সে তার শ্বশুর বাড়িতে আখাউড়ার রাজেন্দ্রপুর গিয়েছিলো । তার বোনের বাড়িও আখাউড়ার নারায়ণপুরে। সেখান থেকে বোনের বাড়িতে যাওয়ার পর তাকে ঘরে আবদ্ধ করে ফেলে স্থানীয় লোকজন। এরপর থেকে তাকে কোন খাবার দেয়া হচ্ছেনা। এই পরিস্থিতিতে সে আতঙ্কে রয়েছে। রিয়াদ আহমেদ সাব্বিরের মোবাইলে যোগাযোগ করলে জানান- তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারী কলেজের অর্নাস ফাইনালের ছাত্র। শুক্রবার বিকেলে বোনের বাড়িতে আসার পর স্থানীয় কিছু ছেলেপেলে সে নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছে বলে খবর ছড়িয়ে দেয় । গ্রামের মসজিদের মাইক থেকেও তা প্রচার করা হয়। সাব্বির বলেন-অথচ নারায়নগঞ্জের সাথে আমার কোন সম্পর্কই নেই। আমি আখাউড়াতেই ছিলাম। শুক্রবার রাজেন্দ্রপুরে জুমার নামাজ পড়ে বিকেলে ৩/৪ কিলোমিটার দূরে নারায়নপুর বোনের বাড়িতে আসি। তাছাড়া আমার শারিরীক কোন সমস্যাও নেই। কিন্তু কেউ শুনছেনা এসব। ৫০/৬০ জন লোক আমার বোনের বাড়ি ঘিরে অবস্থান নেয়। রাত ১০টায় স্থানীয় কাউন্সিলর মন্তাজ মিয়া পুলিশ নিয়ে সেখানে আসেন। আমার বোন জামাই আলী হোসেনের বাড়ি লকডাউন করে দেন। আমিসহ আমার বোনের পরিবারের ৯জন এখন ঘরবন্দী। বাড়িতে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি থেকে লোকজন এসেছিলো সেখানে। তারাও বুঝানোর চেষ্টা করেন আমি রাজেন্দ্রপুর ছিলাম। আমার শারিরীক কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আমাকে নিয়ে যেতে দেয়া হয়নি। সাব্বিরের এক আত্মীয় এডভোকেট সাইফুল ইসলাম জানান- আমি আজ শনিবার সকালে তার সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সে আমাকেও জানিয়েছে পুরোপুরি সুস্থ আছে সে। তার কোন সর্দি,কাশি বা জ্বর নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *