ঢাকা: এ যাবতকালের সর্বোচ্চ প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণার পর দেশের জীবনধারাকে টিকিয়ে রাখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফের কাছে ৫ হাজার ৯শত ১১ কোটি ৫৩ লাখ টাকা সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশে। সরকার আশা করছে, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করতে পারে এই করোনা ভাইরাস মহামারি। আইএমএফ যদি ওই পরিমাণ অর্থ সহায়তা দেয় তাহলে আর্থিক এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা প্রতিরোধ করা যাবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন নিক্কি এশিয়ান রিভিউ। এতে বলা হয়েছে, ঢাকায় অবস্থানরত আইএমএফের প্রতিনিধি রাগনার গুডমান্ডসন নিক্কি এশিয়ান রিভিউকে বলেছেন, জরুরি অর্থ সহায়তা ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান অনুরোধ নিয়ে আমরা কথা বলছি আইএমএফের সঙ্গে।
নিক্কি এশিয়ান রিভিউ আরো লিখেছে, এই আবেদন এমন এক সময়ে করা হয়েছে, যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী রোববার ৯০০ কোটি ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন, যা জাতীয় প্রবৃদ্ধির শতকরা ২.৫ ভাগের সমান। রাগনার গুডমান্ডসন বলেছেন, এই রেসকিউ প্যাকেজ বা উদ্ধার পরিকল্পনা প্যাকেজের অর্থ হলো অর্থনীতিকে সচল রাখা, জনগণের জীবনযাত্রার কঠোর অবস্থাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা, বিশেষ করে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখা।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট শেখ ফজলে ফাহিম বলেছেন, এই প্যাকেজের অধীনে যেসব পদক্ষেপ নেয়া হবে তাতে তরলীকরণের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সক্রিয়তা ধরে রাখা হবে, ব্যবসায়িক কর্মকান্ডকে টেকসই করা হবে এবং বেকারত্বকে কমিয়ে আনা হবে। তিনি আরো বলেন, এই তহবিল ব্যবহারের বিষয়ে অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর অফিসের সঙ্গে কাজ করছে দেশের শীর্ষ চেম্বার।
এর উদ্দেশ্য যেসব ক্ষুদ্র কোম্পানি ব্যাংক থেকে কোনোই সুবিধা পায় না, তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনা নিশ্চিত করা।
ফাহিম বলেন, আমাদের আইডিয়া হলো অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে যতটা সম্ভব সচল রাখা। ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি আকারের উদ্যোক্তারা ২৩৫ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা পাবেন ব্যাংক থেকে। এক্ষেত্রে সুদের হার হবে শতকরা ৯ ভাগ। সরকার ভর্তুকি দেবে শতকরা ৫ ভাগ। এই প্যাকেজের মধ্যে রয়েছে শিল্প ও সেবাখাতে ৩৫০ কোটি ডলারের প্রণোদনা, বস্ত্রশিল্পে ৬০ কোটি ডলার এবং প্রি-শিপমেন্ট খাতে আরো ৬০ কোটি ডলার প্রণোদনা। উপরন্ত রপ্তানি খাতের তহবিল ৩৫০ কোটি থেকে বাড়িয়ে ৫০০ কোটি ডলার ধরা হয়েছে। তা সত্ত্বেও প্রয়োজনের চেয়েও অনেক কম এই অর্থ। এ জন্যই দাতা সম্প্রদায়ের দিকে হাত বাড়িয়েছে বাংলাদেশ।