নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৮০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। এর মধ্যে দুই প্রবাসী বাংলাদেশিও রয়েছেন। গত মার্চের মাঝামাঝি থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন হাসপাতালে মারা গেছে মোট ৩২০২ জন। এ সংখ্যা ক্রমান্বয়েই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এদিকে সুস্থ হয়ে উঠার আগেই হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
৭ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে আকমল হোসেন ঠান্ডু (৬০) এবং কুইন্সে শাহনূর (৬০) নামক দুই প্রবাসী বাংলাদেশি মারা যান। নিহতদের স্বজনেরা জানান, হাসপাতাল থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়ার পরই তারা নিজ ঘরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ঠান্ডু ছিলেন পাবনার সুজানগরের সন্তান এবং শাহনূর ছিলেন রাজধানী ঢাকার ঝিগাতলার অধিবাসী। এ নিয়ে নিউইয়র্ক এবং নিউজার্সি অঞ্চলে ৮৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হলো করোনায়।
রোগী বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বিল ডি ব্লাসিয়ো বলেছেন, চিকিৎসার জন্যে যথাযথ সামগ্রী না থাকায় মুমুর্ষু রোগীদের বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারা নিজ ঘরে মারা যাবার পর সিটির স্বাস্থ্য বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাবার তথ্য লিপিবদ্ধ হচ্ছে না।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো জানিয়েছেন, নিউইয়র্কের কোন হাসপাতালেই আইসিইউ খালি না থাকায় অনেককেই রিলিজ দেয়া হচ্ছে। ভ্যাণ্টিলেটরসহ চিকিৎসা-সামগ্রির সংকটের এ ভয়ংকর তথ্য আগে থেকেই আমরা ফেডারেল প্রশাসনকে অবহিত করেছি।
নিউইয়র্কে বাংলাদেশিসহ দক্ষিণ এশিয়ানদের অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে কর্মরত ‘সাউথ এশিয়ান ফান্ড ফর এডুকেশন, স্কলারশিপ এ্যান্ড টেনিং’ (স্যাফেস্ট)’র প্রধান নির্বাহী এবং কমিউনিটি লিডার মাজেদা এ উদ্দিন জানান, আজ লং আইল্যান্ড জুইশ হাসপাতাল থেকে কে এম মনিরুল ইসলাম (৫৬), কুইন্স হাসপাতাল থেকে এনওয়াইপিডির সিরাজুল ইসলাম (৪৫) এবং সাইদুর রহমান (৩৪), মাউন্ট শিনাই হাসপাতাল থেকে রীনা আকতার (৪০) এবং এনওয়াইইউ থেকে নিলুফার ইয়াসমীন (৪৮)কে রিলিজ দেয়া হয়েছে। এরা কেউই সুস্থ হননি। অর্থাৎ নিজ ঘরে এদেরকে মরতে হবে। এর আগে আরো অন্তত: ৩১ বাংলাদেশিকে রিলিজ দেয়া হয় বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে, যারমধ্যে অন্তত ৫ জন ইতিমধ্যেই মারা গেছেন।