করোনা ভাইরাস থেকে উদ্ভূত পরিস্থিতি সরকার কয়েকটি দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
তিনি বলেন, বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য সরকার খাদ্য, চিকিৎসাসহ সামগ্রিক সুরক্ষার জন্য সব ধরনের সহযোগিতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। এজন্য দূতাবাসগুলোর চাহিদা অনুসারে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৫ এপ্রিল) প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে করোনা ভাইরাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জন্য করণীয় বিষয়ে অনুষ্ঠিত একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনও উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, মানবিক বিবেচনায় কয়েকটি দেশ থেকে যাচাই-বাছাই সাপেক্ষে বিপদগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে কুয়েত থেকে ৩১৬ জন প্রবাসী বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত আনা হবে এবং কুয়েতের সেই ফিরতি ফ্লাইটে ত্রাণ ও খাদ্যসামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়াও ইপিএস এর আওতায় দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত ১৫০ জন কর্মী এবং সেখানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীসহ ২৬ জনকে বাংলাদেশ বিমানের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে কোরিয়ায় পাঠানো হবে।
তিনি বলেন, যেসব বাংলাদেশি প্রবাসীর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে অথবা ইকামার মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ভিসা/ইকামার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে জোর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। কোনো কর্মী বিদেশে চাকরিচ্যুত হলে, অথবা নিয়োগকারী কোম্পানি যদি কর্মী ছাঁটাই করে সেক্ষেত্রে তাদের দেশে না পাঠিয়ে সেদেশের অন্য কোনো কোম্পানিতে নিয়োগের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।
এছাড়াও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যৌথ স্বাক্ষরে বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইমরান আহমেদ বলেন, প্রবাসীদের আবসনের সমস্যা হলে সংশ্লিষ্ট মিশনগুলোকে প্রয়োজনীয় সহায়তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য অর্থ ঋণ সহায়তার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন অর্থ-ঋণ সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়াও তাদের অধিকতর প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতার মান উন্নয়ন করে পুনরায় বৈদেশিক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
‘বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসনের জন্য সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে আর্থিক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হবে। ইতোমধ্যে যারা ছুটিতে দেশে এসেছেন এবং যাদের ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে তারা যাতে পুনরায় যেতে পারে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দেশ থেকে আশ্বাস পাওয়া গেছে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে প্রবাসীদের এই দুর্যোগ মোকাবিলা করছি।’