গ্রাম বাংলা ডেস্ক: ভয় দেখিয়ে সেখান থেকে তাদেরকে উচ্ছেদ করতেই বিহারী ক্যাম্পে হামলা চালায় সরকারি দলের লোকেরা। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লার নির্দেশে যুবলীগ নেতা সোহেল রানার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়।
এসব তথ্য পেয়েছেন গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
বৃহস্পতিবার বাম মোর্চার নেতারা মিরপুরের কালশী বিহারী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ক্যাম্প পরিদর্শনকালে নেতৃবৃন্দ হামলার শিকার ও ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেন। এসময় ক্যাম্পের বাসিন্দাদের সাথে বাম মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কথা বলেন।
আর এখন পর্যন্ত তিন বছরের এক শিশুসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ গ্রেফতারের ভয়ে চিকিৎসা দেয়া যাচ্ছে না। কারণ হামলাকারী-হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ তৎপর না হয়ে ক্যাম্পের অজ্ঞাতনামা ৩ হাজার বাসিন্দার বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা দিয়ে রেখেছে।
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়কারী শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর নেতৃত্বাধীন এ প্রতিনিধি দলে ছিলেন মোর্চার কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল হক, মোশরেফা মিশু, জোনায়েদ সাকী, মোশাররফ হোসেন নান্নু, হামিদুল হক, শহিদুল ইসলাম সবুজ, মিরপুর-পল্লবী অঞ্চলের বাসদ নেতা ড. মুজিবুল হক আরজু, কল্যাণ দত্ত।
বাম মোর্চার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান হয়। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ক্যাম্পের বাসিন্দারা জানিয়েছেন পুলিশ সে সময় হামলাকারীদের পাহারা দিয়ে রক্ষা করে। বাসিন্দারা আরো জানান, ক্যাম্প থেকে বিদ্যুতের অবৈধ লাইন পাশের এলাকায় দেয়ার ক্ষেত্রে বাধা প্রদানকারীর ঘরে তালা দিয়ে আগুন দেয়া হয়। এ আগুনে পুড়েই ১০ জনের নির্মম মৃত্যু হয়। বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, এধরণের ঘটনার উদ্দেশ্য হল, ক্যাম্পের বাসিন্দাদের ভয় দেখানো এবং তাদেরকে উচ্ছেদ করা। বাম মোর্চার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ক্যাম্পের বাসিন্দারা তাদের কাছে আরো অভিযোগ করেছেন , হামলায় শুধু ঘরে আগুনই দেয়া হয়নি, গুলি ছোঁড়া হয়েছে।
এদিকে পরিদর্শণ শেষে নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সেখানে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার-বিচার ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের দাবি জানানো হয়। নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে কালশী বিহারী ক্যাম্পে হামলা ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার-দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ঘটনা তদন্তেÍ নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন এবং কালশী-মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থানকারী উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে সে সম্পর্কে যথাযথ তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রশাসনের দায়িত্ব। নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশে আটকে পড়া উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর সমস্যার স্থায়ী সমাধানে শাসকগোষ্ঠী কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। এদের মানবেতর জীবনে ঠেলে রেখেছে। নেতৃবৃন্দ এই জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনের দাবিতে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশের স্যেকুলার প্রগতিশীল গণতন্ত্রমনা মানুষের প্রতি আহ্বান জানান।