ঢাকা: করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে মারা গেছেন আরও ১৩ জন। এর মধ্যে ঢাকায় দুই, সাতক্ষীরায় এক, শরীয়তপুরে এক, পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে এক, নড়াইলে এক, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় এক, রাজবাড়ীতে এক, ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় এক, ফেনীতে এক, বগুড়ায় এক এবং নাটোরে দু’জন রয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা দু’জন মারা যান। তাদের মধ্যে একজনের বয়স ৬৫ এবং অপরজনের ৩২। সন্ধ্যায় বিষয়টি জানান হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (অর্থ) ডা. আলাউদ্দিন আল আজাদ। তিনি বলেন, তারা জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে ভর্তি ছিলেন। করোনায় তারা মারা গেছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। বগুড়ায় মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা শিশুর (১৩) মৃত্যু হয় বুধবার। ভর্তি হওয়ার প্রায় ৩ ঘণ্টা পর সে মারা যায়। তার বাড়ি গাবতলী উপজেলায়।
মঙ্গলবার রাতে জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি নাটোরের লালপুর উপজেলার নবীনগর গ্রামে। রামেক হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ ডা. বুলবুল হাসান বলেন, ওই যুবকের করোনা-সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে হলে ঊর্ধ্বতন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সুপারিশসহ আমাদের কাছে আসতে হবে। তা ছাড়া আমরা নমুনা পরীক্ষা করতে পারি না।
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় জ্বর ও ডায়রিয়ায় তিন বছরের শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বাড়িতেই সে মারা যায়। উপজেলা হাসপাতালের আরএমও মো. কামরুজ্জামান জানান, শিশুটি করোনায় আক্রান্ত ছিল কি-না, বলা যাচ্ছে না। তবে সতর্কতার জন্য ওই বাড়ির ছয় পরিবারকে কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার নাটোর রেলস্টেশন এলাকায় এক ব্যক্তির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। স্টেশন এলাকাতেই মানসিক ভারসাম্যহীন ওই ব্যক্তি ঘোরাফেরা করতেন। পরে মেয়র উমা চৌধুরী জলির হস্তক্ষেপে লাশ উদ্ধার ও দাফন সম্পন্ন হয়। তার মৃত্যুর কারণ কেউ শনাক্ত করেনি। বুধবার সকালে সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়নে শ্বশুড়বাড়ি বেড়াতে এসে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। স্থানীয়দের দাবি, তিনি কাশি ও গলাব্যথায় ভুগছিলেন। তার পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রের দাবি, তিনি হৃদরোগে মারা গেছেন।
রাজবাড়ীতে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মঙ্গলবার রাতে ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি শহরের টিঅ্যান্ডটি পাড়ায়। সিভিল সার্জন জানান, ঢাকার চিকিৎসকরা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন তার করোনা হয়নি। এজন্য তারা নমুনা সংগ্রহ করেননি।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার নিজ বাড়িতে সোমবার মধ্যরাতে শ্বাসকষ্ট ও জ্বরে ৭০ বছর বয়সী একজনের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। নড়াইল সদর হাসপাতালে মঙ্গলবার রাতে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট ও শরীর ব্যথা নিয়ে এক ব্যবসায়ী মারা গেছেন। তার বাড়ি নড়াইল পৌরসভার দক্ষিণ নড়াইল এলাকায়। মঙ্গলবার রাতে পিরোজপুরের ইন্দুরকানীর উত্তর ভবানীপুর গ্রামের এক বৃদ্ধ জ্বর ও শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তির তিন ঘণ্টা পর যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার বাড়ি নড়িয়া উপজেলায়। তিনি টিবি রোগ ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। বুধবার ভোরে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জের বন্দকাটি গ্রামে জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে এক নারী মারা গেছেন।
বুধবার ফেনীর সদর থানার পশ্চিম ছনুয়া গ্রামে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তার নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। টাঙ্গাইলের মধুপুরে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ব্যক্তির দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ওই ব্যক্তির বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
সূত্র সমকাল