হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ঢাকা ফেরত আজিজুল ইসলাম ওরফে মাস্টার (৪৫) নামে এক রিকশা চালক শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। এ ঘটনার পর করোনা আতঙ্কে বাড়ি ছেড়েছেন তার প্রতিবেশীরা।
শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে উপজেলা সদরের ভাদাই ইউনিয়নের হেলিপ্যাড এলাকায় নিজ বাড়িতে তিনি মারা যান। মাস্টার ওই গ্রামের নান্দু মিস্ত্রীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলা সদরে বুড়িরহাটের নৈশ্যপ্রহরী আজিজুল ইসলাম ওরফে মাস্টার দীর্ঘদিন অ্যাজমা রোগে ভুগছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নৈশ্যপ্রহরী চাকরি ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। সেখানে দীর্ঘদিন রিকশা চালিয়ে গত ৭-৮ দিন আগে জ্বর, সর্দ্দি ও কাশি নিয়ে বাড়ি ফেরেন। বাড়ি ফিরে জ্বর, সর্দ্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টের জন্য আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বর্হিবিভাগে চিকিৎসাপত্র গ্রহণ করেন। চিকিৎসকরা তাকে বাড়িতে অবস্থান করে সতর্কতার সঙ্গে চলতে পরামর্শ দেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশও তাকে বাড়ির বাইরে না যেতে নিষেধ করেন।
শনিবার দুপুর ২টার দিকে নিজ বাড়িতেই শ্বাসকষ্টে মারা যান আজিজুল ইসলাম ওরফে মাস্টার। মৃত্যুর খবরে করোনা সন্দেহে মুহুর্তে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান প্রতিবেশীরা। তাদের ধারণা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন দ্রুত ও সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে দাফনের নির্দেশ দেন। তবে নিকট আত্মীয়রা ওই বাড়িতে ভিড়লেও প্রতিবেশীরা জনসমাগম কম করার জোর তাগিদ দিলেও মানছে না আত্মীয়রা। ফলে উভয়ের মধ্যে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। তবে আদিতমারী কেন্দ্রীয় কবর স্থানে তাকে দাফন করা হবে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানান, আজিজুল মাস্টার অসুস্থ অবস্থায় ঢাকা থেকে ফিরে জ্বর, সর্দ্দি ও শ্বাসকষ্টের চিকিৎসা করেছেন। পুলিশ তাকে বাইরে যেতে নিষেধ করেছেন। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সন্দেহে তার জানাজায় যাইনি। তাদের বাড়ির লোকজনকে বাইরে না আসতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে নিকট আত্মীয় স্বজনরাই দাফন করেন।
মৃত আজিজুল মাস্টারের ভাতিজা ফজলুর রহমান বলেন, আজিজুল মাস্টার দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমায় ভুগছিলেন। ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়ি ফিরে তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন। শনিবার দুপুরে মারা যান আজিজুল। প্রশাসনের নির্দেশ মেনে দ্রুত তাকে দাফন করা হয়েছে।
ভাদাই ইউপি চেয়ারম্যান রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশ পালন করতে মৃতের পরিবারকে মোবাইলে বলা হয়েছে। তারা দ্রুতই দাফন সম্পন্ন করছেন।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নিমর্লেন্দু রায় বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।