ঢাকা: করোনা ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭,২৪৩ জনে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ। সবথেকে বেশি আক্রান্ত এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গত এক সপ্তাহে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে দেশটি। সেখানে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার মার্কিনির। তবে মৃতের সংখ্যায় গত ২৪ ঘন্টায় প্রথমেই রয়েছে ইতালি। দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
বিপর্যস্ত স্পেন
গত ২৪ ঘন্টায় স্পেনে করোনা আক্রান্ত হয়ে একদিনে এ যাবত কালের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এদিন স্পেনে মারা গেছেন মোট ৮৩২ জন। ফলে সেখানে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬৯০ জন। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজারে। সর্বশেষ একদিনে বেড়েছে ৮০০০ এর বেশি। মোট সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ১০ হাজার জন।
এদিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেব থেকে জানা গেছে, স্পেনে আক্রান্তদের একটি বড় অংশই করোনার সঙ্গে লড়াইরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। সেখানে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করেছে যে, সেখানে যে পরিমাণ স্বাস্থ্যকর্মী করনা আক্রান্ত হয়েছে তা বিশ্বের অন্য দেশগুলোর থেকে বেশি।
ইতালিতেও রেকর্ড
গত ২৪ ঘন্টায় ইতালিতে রেকর্ড ৯১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে দেশটিতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৯১৩৪ জনে। দেশটি গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুরোপুরি লকডাউন হয়ে আছে। কিন্তু তাতেও কমছে না মৃত্যুর সংখ্যা। দেশটির সরকার মানুষদের বাড়ির বাইরে আসতে অনুরোধ জানিয়ে যাচ্ছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইতালির কর্তৃপক্ষ চলাফেরা এবং স্বাভাবিক কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ৩ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়াতে পারে। ইতালির উত্তরাঞ্চলীইয় এলাকা লোমবার্দি দেশটির সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা। সেখানে করোনায় মৃত্যুর হার পূর্বের তুলনায় আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে প্রায় ৬ হাজার।
গত দুইদিনে সবথেকে বেশি করোনা সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। একদিনেই আক্রান্ত হয়েছেন ১০ হাজারের বেশি মানুষ। ফলে তীব্র সংকটে পরেছে দেশটির স্বাস্থ্যখাত। ইতিমধ্যে সরঞ্জাম চেয়ে বিভিন্ন দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে মার্কিন সরকার। সেখানকার গবেষকরা বলছেন এভাবে চলতে থাকলে করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে মারা যেতে পারে কয়েক মিলিয়ন মানুষ।
ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি ও স্পেনের পর সবথেকে খারাপ অবস্থা জার্মানির। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা অর্ধলক্ষ ছাড়িয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন ৩৫১ জন। দেশটিতে মৃত্যুর হার মহাদেশটিতে সবথেকে কম। ফ্রান্সে আক্রান্ত বেড়ে শনিবার দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৩০০০ জনে। এরমধ্যে মারা গেছেন কমপক্ষে ২৩০০। এদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। কোয়ারেন্টিনে থেকেই তিনি সরকার পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪,৫৫৩ জন। মারা গেছেন ৭৫৯।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবথেকে গুরুতর অবস্থা পাকিস্তানের। দেশটিতে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২৭ জনে। সেখানে মারা গেছেন ১২ জন ও সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২৫ জন। অবস্থা আরো গুরুতর হওয়ার পূর্বে লকডাউন ঘোষণায় চাপ বাড়ছে পাক সরকারের ওপর। তবে নাজুক অর্থনীতির কথা বিবেচনায় লকডাউন ঘোষণার বিরোধিতা করছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অপরদিকে ভারতে শনিবার পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮৭ জন। সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ জন। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ শ্রীলঙ্কায় আক্রান্ত ১০০ ছাড়িয়েছে। তবে সেখানে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।