ঢাকা: মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ। স্বাধীনতার ৪৯তম বার্ষিকী। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল সূচনার দিন। যাদের ত্যাগ আর রক্তে অর্জিত এই স্বাধীন ভূখণ্ড সেই বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন আজ। মুক্তির আনন্দে সমৃদ্ধির শপথে মুষ্টিবদ্ধ হওয়ার দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার ঘোষণায় উদ্দীপ্ত হয়ে মুক্তির লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছিল মুক্তিকামী জনতা। ঘোষণা হয়েছিল বাংলার স্বাধীনতা। বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের আতঙ্কের মধ্যে এবার ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস।
দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে বাতিল করা হয়েছে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি। স্থগিত করা হয়েছে স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠান। এমন অবস্থায় আজ সীমিত পরিসরে পালিত হবে এ দিবসের কর্মসূচি। পুরো জাতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় স্মরণ করবে মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের।
শ্রদ্ধার সঙ্গে জাতি স্মরণ করবে স্বাধীনতার মহান স্থপতি ও স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তার শততম জন্মবার্ষিকীতে এবারের স্বাধীনতা দিবস বাড়তি বর্ণিল হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে বঙ্গবন্ধু’র জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচিও কাটছাট করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। এদিকে করোনা ভাইরাসের কারণে জনস্বাস্থ্যের ঝুঁকি থাকায় এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি বাতিল করেছে।
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ কালোরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে যে বিভীষিকাময় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল-দীর্ঘ নয় মাসে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে দামাল বাঙালি এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সে যুদ্ধে বিজয় লাভ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে। ১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তানি সামরিক জান্ত ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তার ধানমণ্ডির বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয়ে যায় স্বাধীনতার যুদ্ধ। এর আগে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দেয়া ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মূলত স্বাধীনতা সংগ্রামের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। সর্বকালের সেরা এই ভাষণ এখন বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ।