কলকাতা: ভারতজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করার পাশাপাশি সংবাদপত্র ও বৈদ্যুতিক গণমাধ্যমকে জরুরি পরিষেবার আওতায় রেখে ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় সংবাদপত্র বিলি-বণ্টনে দেখা দিচ্ছে নানা অসুবিধা। সংবাদপত্র থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়ায় না বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বিশেষজ্ঞরা জানানোর পরেও অনেক হকার আতঙ্কে সংবাদপত্র বিলি করতে চাইছেন না। অনেক জায়গাতেই পাঠকরা সংবাদপত্র পাচ্ছেন না গত দু’দিন ধরে। ‘এই সময়’ পত্রিকার সাংবাদিকরা ফেসবুকে জানাচ্ছেন যে, তারা নিজেরাও কাগজ পাচ্ছেন না। কলকাতার বড় সংবাদপত্রগুলোর অনেকে প্রকাশনা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার কথা ভাবছেন।
পশ্চিমবঙ্গের কয়েক লক্ষাধিক প্রচার সংখ্যার জনপ্রিয় পত্রিকা ‘বর্তমান’ বুধবারের সংস্করণের প্রথম পৃষ্ঠায় এক ঘোষণায় জানিয়েছে, করোনা নিয়ে আতঙ্কের প্রভাব পড়েছে সংবাদপত্র বিলি-বণ্টনে। তাই বৃহস্পতিবার থেকে কয়েকদিনের জন্য ‘বর্তমান’ প্রকাশ ও বিলি-বণ্টন সম্ভব হচ্ছে না।
আপাতত প্রকাশিত হবে না ‘সাপ্তাহিক বর্তমান’ ও ‘সুখী গৃহকোণ’ও। তবে জানানো হয়েছে, পাঠকের কাছে প্রতি মুহূর্তের খবর পৌঁছে দিতে ওয়েবসাইট ও অ্যাপ চালু থাকবে। আরো কয়েকটি সংবাদপত্র এই পথে হাঁটতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে ইতিমধ্যেই সর্ববৃহৎ সংবাদপত্রগুলোর পৃষ্ঠা সংখ্যা অনেকটাই কমিয়ে দেয়া হয়েছে। ‘আনন্দবাজার পত্রিকা’র বুধবারের সংস্করণ ২২ পৃষ্ঠা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে মাত্র ১৪ পৃষ্ঠা। অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদপত্র সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, সাধারণ মানুষকেও খবরের কাগজ পড়তে হবে। না হলে মানুষ প্রাত্যহিক জিনিসগুলো জানবেন কী করে? সংবাদপত্র হকারদের কাছে কীভাবে পৌঁছে দিতে হবে, সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেছেন, প্রতিটি সংবাদমাধ্যমকে বলবো, আপনারা গাড়িতে কাগজ নিয়ে দাঁড়াবেন। হকারেরা এলে দূরত্ব রেখে পাঁচ জন করে লাইন করিয়ে কাগজ দিয়ে দেবেন। যারা বাড়ি বাড়ি কাগজ দেন, তারা তা পৌঁছে দেবেন। সংবাদপত্র স্টেশনে, বণ্টন কেন্দ্রে বা রাস্তায় স্তূপ করে না রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।