সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মারণ ভাইরাস করোনা। এই ভাইরাসের কারণে কাঁপন শুরু হয়েছে বিশ্বব্যাপী। একের পর এক শহর লকডাউন হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে দেশের পর দেশ। ফ্রান্স, ইতালি আর চীনের অবস্থা তো শোচনীয়ই।
করোনা আতঙ্কে সারা বিশ্বের অনেক মানুষই স্বেচ্ছা ঘরবন্দি হয়ে পড়ছেন। বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। আবার অনেকেই বাসা থেকে বের হচ্ছেন কম। ঘরেই বসে থাকছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী কনডম ও গর্ভনিরোধক পিলের ব্যবহার বেড়ে গেছে। করোনার সময়ে নারী-পুরুষদের মধ্যে সহবাসের মাত্রা বেড়ে গেছে বলে দাবি করছেন বিশেষজ্ঞরা।
লিভ-ইন দম্পতি নিকিতা শ্রীবাস্তব (ছদ্মনাম) ও গৌরব মাথুর (ছদ্মনাম)। তারা অনেক দিন ধরেই একসঙ্গে বাস করছেন। দু’জনেই চাকরি করেন। তারা জানান, এই ‘হোমবাউন্ড পিরিয়ড’-এ একে অপরের সম্পর্কে আরো বেশি জানতে পারবেন। নিকিতা বলেন, আগে আমাদের অফিসগুলোতে বিভিন্ন শিফট ছিল। আলাদা আলাদা সময়ে আমরা কাজ করতাম। কিন্তু এখন অফিস বন্ধ। আমরা বাড়িতে বসে অফিসের কাজ করি। এতে আমরা একে অপরের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটাতে পারি।
তিনি বলেন, আমরা চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। দু’জনের কেউ যদি করোনায় আক্রান্ত না হই; আর আমরা যদি শারীরিক সম্পর্কতেও যাই তাহলে কোনো সমস্যা হবে না। তার মতে, তাদের জন্য এমন পরিস্থিতি আসলেই ভালো।
ই-কমার্স সাইটগুলোতে কনডম ও গর্ভনিরোধক পিল বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এই বিষয়টি এটাই মনে করায় যে করোনার মধ্যেও মানুষ ভালোবাসা খোঁজে চলছে। ঘরে বসে নিজের ব্যক্তিগত কাজ করার পাশাপাশি সঙ্গীর খোঁজও রাখছেন মানুষ। করোনা ভয়কে দূরে ঠেলে দিয়ে মিলিত হচ্ছেন সহবাসে।
করোনাভাইরাস মহামারি বড় আকার ধারণ করছে। সেই সঙ্গে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছে গভীর উদ্বেগ। তাই অনেক অফিসই কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার অনুমতি দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেই বাড়িতে বসে কাজ করছেন। সময় পাচ্ছেন নিজের সঙ্গীকে কাছে পাওয়ারও। ব্যস্ত সময়কে পেছনে ফেলে ভালোবাসা খোঁজছেন তারা। নিজের সঙ্গীকে আরো কাছে টেনে নিচ্ছেন। তাই মাস্ক-ওষুধের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কনডম আর পিলের চাহিদাও।
দিল্লির এক ফার্মেসির মালিক বলেন, আমাদের মাস্কের মজুদ শেষ হয়ে গেছে। অনেক মানুষই ক্লোরোকুইন ও ভিটামিন-সি জাতীয় ওষুধের খোঁজ করছেন। সেই সঙ্গে মানুষ কনডমেরও খোঁজ করছেন। আবার কেউ কেউ এসে খোঁজ করছেন গর্ভনিরোধক পিলের। একটি শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স সাইটের সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানায়, কনডম ও গর্ভনিরোধক পিলের বিক্রি অনলাইনে বেড়ে গেছে।
দিল্লির স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালের (এসজিআরএইচ) মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রাজীব মেহতা বলেন, যুদ্ধ ও মহামারির সময়ে অনেক মানুষই বাসা-বাড়িতে বেশি সময় কাটাতে থাকেন। এসময় সঙ্গীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার মাত্রা বেড়ে যায়।