মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও চিকিৎসক ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেছেন, রাষ্ট্র যদি চিকিৎসকদের তদারকি করতে পারে, তাহলে কাজের নিরাপদ পরিবেশ করাও তাদের দায়িত্ব। নিরাপত্তা কেন দিবে না? এর জবাব দিতে হবে। ডাক্তারদেরও পরিবার আছে। চিকিৎসকদের পিপিই দেয়া না হলে কোনো চিকিৎসক সেবা দিতে বাধ্য না। বাধ্য করতে পারেন না। এটা মানবাধিকারের লঙ্ঘণ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সম্প্রতি এফডিএসআর এর একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আব্দুন নূর তুষার বলেন, একটা উহান শহর কিংবা ইতালি দিয়ে পুরো বিষয়টি বিবেচনা হবে না। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, যেসব রেট আমরা পাচ্ছি, সেসব দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা কেমন ছিলো সে বিষয়টিকে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা তো অন্যায় কিছু চাইনি।
আমরা চিকিৎসা করার উপকরণ চেয়েছি। এবং এটা দিতে হবে। এর দায়িত্ব কাউকে না কাউকে নিতে হবে। আর দায়িত্ব নিতে না পারলে তাও বলতে হবে। কারণ কারও পক্ষে ব্যক্তিগত খরচে ইকুয়েপমেন্ট কিনে চিকিৎসা করা সম্ভব না।
গণমাধ্যমকর্মীদের সচেতনার বিষয় তুলে ধরে ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, আপনারা ধাক্কাধাক্কি করে তথ্য সংগ্রহ করছেন। আপনাদের প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনাদেরকে নিরাপত্তার ইকুয়েপমেন্ট দিতে হবে।
তিনি বলেন, করোনায় চীনে ২ পারসেন্ট আক্রান্ত হয়েছে বলে বাংলাদেশেও ২ পারসেন্ট হবে এটা ভাবা ঠিক নয়। বিদেশ ফেরতরা তো চাইবেই তারা তাদের পরিবারের কাছে দ্রুত ফিরে যেতে। তাদেরকে তো সচেতন করতে হবে। সচেতন করার কোনো উদ্যোগ তো দেখি নাই। প্রতিদিনি সংবাদ সম্মেলন করা আর প্রকৃত গাইডলাইন প্রস্তুত করা এক না। এটা আমাদেরকে বুঝতে হবে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সমাজকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, এবং সংযুক্ত মন্ত্রণালয়কে টাস্কফোর্স করা হয়নি। আন্ত:মন্ত্রণালয় সভা করে কার কি দায়িত্ব তা বন্টন করা হয়নি। এখন যা রোগী শনাক্ত হয়েছে, পাবলিক কমিউনিকেশনের কারণে আরো বাড়তে পারে। এটা বন্ধ করা এখন খুবই জরুরি। মানুষকে জানাতে হবে। স্কুল ছুটি দিলেও শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কোনো গাইডলাইন দেয়া হয়নি। গণপরিরহনকে সীমিত করা হয়নি। সাধারণ মানুষ বাসের টিকেট কেটে যেখানে খুশি যেতে পারছে। কোন এলাকায় রোগী শনাক্ত হয়েছে, এটা বলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেই এলাকাটিকে কোয়ারেন্টিন করতে হবে। আক্রান্ত লোক কার কার সংস্পর্শে আসছে, সেটাও দেখতে হবে। চীন আগে থেকেই প্রতিটি এলাকায় ক্যামেরা লাগিয়ে নিয়েছে। যার ফলে কে কোথায় কার সঙ্গে মিশছে তা বের করা সম্ভব হচ্ছে। সেই ক্ষমতাতো আমাদের নাই। আমাদেরকে এখন জনে জনে গিয়ে জিজ্ঞাসা করতে হবে।
চীনে এক কোটি লোকের মধ্যে এক লাখ লোক আক্রান্ত হলে, আমাদের হবে ২০ লাখ। ২০ লাখ আক্রান্ত হলে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়বে। ফলে যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা সচেতন না হবো ও লোকের চলাচল বন্ধ করতে না পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত এই রোগ ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশে এখন প্রায় ৯০ হাজার ডাক্তার রোগী দেখেন। পরীক্ষার জন্য যদি একটি করে যন্ত্র দেয়া হয়, তাহলে আগামী ৩ মাসে ৫১ লাখ পিপি দরকার। এগুলো হিসেব করতে হবে। বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের হিসেব নাই। তাহলে তাদের কাজ কি?