সিলেট প্রতিনিধি :: ২০১৫ সালে চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু উদ্বোধনের পর থেকে কুশিয়ারা পারের মানুষের যাতায়াতের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। তবে উদ্বোধনের পর একে একে অতিবাহিত হয়েছে ৪’টি বছর। তবে চাঁর বছরেও সেতুটিতে লাগেনি আধুনিকতার ছোয়া। সড়কবাতি ও সিসি ক্যামেরা বিহিন সেতু রাতে ভুতুরে নগরীতে পরিনত হয়। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন ও পথ যাত্রীদের চলাচল করতে হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চন্দরপুর-সুনামপুর সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ২০ বছর অপেক্ষার পর ২০১৫ সালে সেতুটির উদ্বোধন করা হয়। এ সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে সিলেটের গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার এবং মৌলভীবাজারের বড়লেখা ও জুড়ি এ চারটি উপজেলার লোক। এছাড়াও গোলাপগঞ্জের চন্দরপুর, বানীগাজি, কালিডহর, বনগ্রাম, বাগিরঘাট, কালিজুরী, আাছিরগঞ্জ, খাগাইল, হলিমপুর, দেবারাই, আমকোনা, নোয়াই, মোল্লারচক, ছয়ঘরি, বাগলা, ছালিকোনা, বাগলা বাজার, কুশিয়ারা পুলিশ তদন্তকেন্দ্র, কেওটকোনা বাদেপাশাসহ কুশিয়ারা জনপদের প্রায় ৫০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করেন। সেতুতে সিসি ক্যামেরা ও সড়কে ল্যাম্পপোষ্ট তথা বাতি না থাকায় চলাচল নিরাপত্তা ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। রাতের আধারে ছিনতাই ও ডাকাতির আশঙ্কায় প্রতিনিয় ভুগছেন চালক ও যাত্রীরা।
নোহা চালক মতিন বলেন, এ রাস্তা দিয়ে গভীর রাতে যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে ভয় করে। সেতুর দু-প্রান্তে দুটি মোড় রয়েছে এতে অন্ধকারে গাড়ি ক্রসিংয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া রয়েছে দুষ্কৃতিকারীর ভয়। শীগ্রই সেতুটি সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা ও সড়কবাতির ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি দাবি জানান স্থানীয়রা।
সিসি ক্যামেরা ও সড়কবাতি’র ব্যাপারে জানতে চাইতে গোলাপগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন, সেতুটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের অধীনে কাজ হয়েছিল। কাজ শেষে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাদের বা আমাদের তালিকায় সড়কবাতি বা ইলেকট্রিসিটির কোনো বরাদ্দ নেই। সাধারণত শহরাঞ্চলের সেতুগুলোতে সড়কবাতি থাকে গ্রামাঞ্চলের সেতুতে থাকে না।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গোলাপগঞ্জের কুশিয়ারা তীরের মানুষের নদী পারাপারের একমাত্র বাহন ছিল খেয়া নৌকা। এতে করে প্রতিনিয়তই ভোগান্তি পোহাতে হতো যাত্রীদের। নদী পারের মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘব করতে ১৯৯৫ সালের জুলাই মাসে সড়ক ও জনপদ বিভাগ ফেরি চালু করে। পরে তৎকালীন সংসদ সদস্য ড. সৈয়দ মকবুল হোসেন লেচু মিয়ার প্রচেষ্ঠায় ১৯৯৬ সালে কুশিয়ারা নদীর বুকে সেতু নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। পরে দীর্ঘদিন ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতার অবসান ঘটিয়ে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের প্রচেষ্টায় ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ হয়। পরে ২০১৫ সালের ২০ আগস্ট ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ সেতুটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।