নোয়াখালী: নোয়াখালীতে ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১০ জন।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানউল্যাপুর ইউনিয়নে রোববার দিবাগত রাতে জামায়াত-শিবিরের হামলায় ছাত্রলীগের ১০ জন গুলিবিদ্ধ হন। এতে আহত ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব হোসেন (১৭) গতকাল দুুপুর ২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিহত রাকিব হোসেন আমানউল্লাপুর গ্রামের পাটোয়ারি বাড়ির সফিউল্লার ছেলে। আমানউল্লাপুর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সংঘর্ষে আহত ছাত্রলীগের অপর কর্মীরা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে আহত হাবিবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জানা গেছে, রোববার রাতে ইউনিয়নের নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর সড়কের পলোয়ান বাজারের কামালের চায়ের দোকানে চা খাচ্ছিলেন ছাত্রলীগ কর্মীরা। হঠাৎ রাত ৮টার দিকে সিএনজি গাড়িতে শিবিরের কয়েকজন বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মুখোশ পরে এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে হাবিব, রায়হান, রনি ও মনু সহ ৫ জন আহত হন। আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে স্থানীয়রা পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় শিবিরের কয়েকজন দোকানে প্রবেশ করে কুপিয়ে আরো ৫ জন ছাত্রলীগের কর্মীকে আটক করে। পরে হামলাকারীরা চলে গেলে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বাকীদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা চলছে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হারুন অর রশিদ চৌধুরী জানান, পরিবারের লোকজন তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে। খুনের ঘটনায় জামায়াত নেতা ফারুক হোসেন, আসলাম হোসেন, শিবিরের রোকন (রসুলপুর) ইব্রাহীম ও মাসুদকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুর-নোয়াখালী সীমান্ত এলাকা হওয়ায় দুই জেলায় সন্ত্রাসীরা যুক্ত হয়ে মাঝে মধ্যে নোয়াখালী সীমান্ত এলাকায় অস্ত্রবাজি করে। এদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চলছে। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। ছাত্রশিবির নোয়াখালী জেলা উত্তর সভাপতি গোলাম কিবরিয়া, সেক্রেটারী হুমায়ুন কবির জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার ১নং আমানুল্লাপুর ইউনিয়নের আমানুল্লাপুর পলোয়ান বাজারে যে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটে, তা ছিল রাজনৈতিক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পূর্বশত্রুতার জের। পরে তারা আবার আমাদের লোকজনের বাড়ি ঘরে ভাঙচুর করে। এতে যারা আহত, গুলিবিদ্ধ ও নিহত হয়েছে, তাদের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোন ধরনের পূর্ব শত্রুতা নেই। কারণ আমরা সমবস্থানের ছাত্র রাজনীতিতে বিশ্বাসী।