রাতুল মন্ডল শ্রীপুর: দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর বাবা নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়ার জেরে ঐ ছাত্রীকে শ্রেণী কক্ষ থেকে বের করে দিলেন মাহফুজা আক্তার নামে এক শ্রেণী শিক্ষিকা(অতিথি শিক্ষিকা)। এতে বিদ্যালয়ে ও স্থানীয় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে শ্রেণী শিক্ষক মাহফুজা আক্তারের পাঠদানের সময় সকল শিক্ষার্থীদের সামনে বকেয়া বেতনের জন্য দশম শ্রেণীর মানবিক শাখার শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলামকে বিভিন্ন ভাবে অপমান অপধস্থ করে। একপর্যায়ে ধমক্কে মাসিক বেতন পরিশোধ করেই পাঠদানে যোগ দেয়ার নির্দেশ দেন। এতেও সাদিয়া শ্রেণী কক্ষ থেকে না বের হতে চাইলে তাকে বের্তাঘাত করা হয়। পরে জোরপূর্বক তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেন ওই শ্রেণী শিক্ষকা।
এ ঘটনায় শিক্ষার্থী বাবা মো.আবুল কালাম আজাদ পরের দিন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ওই শিক্ষকের (মাহফুজা) বিরুদ্ধে মৌখিক অভিযোগ দেয়। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষিকা ওই দিনই দশম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের দিয়ে সাজানো লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান
শিক্ষককের কাছে। অভিযোগে শিক্ষার্থীরা উল্লেখ: যতক্ষণ পর্যন্ত না ওই ছাত্রী ও তাঁর বাবা নিঃশর্ত ক্ষমা না চাইবে ততক্ষণ পর্যন্ত সাদিয়া ইসলামকে বিদ্যালয়ে ঢুকতে পারবে না।
টেপিরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম জানায়, শ্রেণী শিক্ষকের কাছে রাতে কোচিং না করায় বিভিন্ন ভাবে আমাকে জব্দ করে। অপমান জনক কথা বার্তা বলে। এই জের ধরে বকেয়া বেতনের পরিশোধ না করায় আমাকে প্রতিনিয়ত গালমন্দ করেন ও প্রতিদিন ক্লাস রুমে দাঁড় করিয়ে রাখে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, বকেয়া বেতন চাওয়া মূল কারন নয়। শ্রেণী শিক্ষকের কাছে কোচিং না করায় তিনি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ভাবে জব্দ করার চেষ্টা করেন। সুযোগ পেলেই অপমান অপধস্থ করেন। এ ধরণের শিক্ষককে আমরা বিদ্যালয়ে চাই না।
শিক্ষার্থীর বাবা আবুল কালাম আজাদ জানান, আমার মেয়ের শুধু জানুয়ারি মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে। যার কারণে মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে অপমান করেন ঐ শ্রেণী শিক্ষক। তার উদ্দেশ্য কোচিং করতে হবে শিক্ষার্থীদের। এ ঘটনায় আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি।
টেপিরবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.জসিম উদ্দিন জানান, সাদিয়া ইসলাম নামে একটি শিক্ষার্থীর বাবার অভিযোগের বিষয়ে তদন্তক করছি। তবে ওই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষার্থীরাও অভিযোগ দিয়েছে। সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। মূল কারনটি আশা করি প্রকাশ হবে।
অভিযুক্ত টেপিরবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষিকা মাহফুজা আক্তার বলেন, আমাকে শিক্ষার্থীরা বাবা অতিথি শিক্ষক বলায় আমি ব্যাপক ভাবে অসম্মানিত হয়েছে। এইটি আমার পছন্দের কিছু শিক্ষার্থীরা শুনে ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে। এছাড়া ওই অভিভাবক আমার আচারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলায় আমি অপমানিত হয়েছি।
শ্রীপুর উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো.সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার অভিযোগ শুনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অতিথি শিক্ষক শ্রেণী শিক্ষক হওয়ার কোন বিধান নেই। যারা এই কাজটি করছে সম্পূর্ণ নীতি বহিরভূত করছেন।