ডেস্ক: দু’বছর আগে ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন মা। ওই ঘটনায় মেয়ে বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। আর এর খেসারত এবার দিলো মেয়ে নিজেই। মামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে মায়ের ধর্ষণকারীরাই এবার তাকে ধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় মামলা দিতে গেলেও নেয়নি পুলিশ। তারা অভিযোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অভিযোগ ভুক্তভোগী মায়ের। গত সপ্তাহে ঘটনাটি ঘটেছে ভোলার দৌলতখানে।
এ রিপোর্ট দিয়েছে বিবিসি বাংলা।
বিবিসি বাংলার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই নারী অভিযোগ করেছেন যে, তার মেয়েকে ধর্ষণের বিষয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকে সহায়তা করেনি এবং মামলা না নিয়ে অভিযোগ গ্রহণ করেছে। ভোলা সদর হাসপাতালে তার মেয়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ওই নারী।
অভিযোগ ওঠেছে, ১৩ই ফেব্রুয়ারি ভোলার দৌলতখান থেকে ওই কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। তার পরদিন কিশোরীর মা দৌলতখান থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলে ।
ওই নারী বিবিসিকে আরও বলেন, আমি পুলিশকে বলি যে ‘আমি তো মামলা করতে এসেছি, অভিযোগ দায়ের করতে নয়। পুলিশ আমাকে অভিযোগ দায়ের করতে উপদেশ দিয়ে বলে যে বাকি কাজ তারা করে নেবে।’
তবে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে একটি ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করে, যেটির প্রাথমিক সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে তারা ঘটনার সম্পূর্ণ সত্যতা পায়নি।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাজলার রহমান বলেন, আমাদের কাছে একটি ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর মা। তবে প্রাথমিক তদন্ত শেষে আমাদের মনে হয়েছে যে এটি সাজানো ঘটনা, তাই আমরা এখনো কোনো মামলা করিনি।
ভোলা সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা কতটা যথাযথভাবে হচ্ছে সে বিষয়েও আপত্তি তুলেছেন ওই কিশোরীর মা। তবে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার তাইয়েবুর রহমান জানান, মেয়েটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে এবং আদালতে পাঠানোর জন্য প্রতিবেদনও প্রস্তুত করা হয়েছে। কিন্তু মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা – সে বিষয়ে বলতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তরুণীর মা বলেন, ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে তিনিও গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন আর সেই ঘটনা যারা ঘটিয়েছিল তারাই গত সপ্তাহে তার মেয়েকে গণধর্ষণ করে। দু’বছর আগের ওই ঘটনায় তার মেয়েই বাদী হয়ে মামলা করেছিলো। প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় ওই ঘটনার সময়ও পুলিশের পক্ষ থেকে সহায়তা পাননি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, দু’বছর আগের ঘটনায় তাদের (স্থানীয় পুলিশের) তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া না যাওয়ায় মামলা গোয়েন্দা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে ওই মামলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের তদন্তাধীন রয়েছে।