ঢাকা: দেশে ইংরেজি মাধ্যমে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের বাংলা উচ্চারণের দৈন্য দশা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এই হতাশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বায়নের এই যুগে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য অন্য ভাষার শেখার প্রয়োজন আছে। তবে সেটা মাতৃভাষাকে বাদ দিয়ে নয়। শুদ্ধভাবে বাংলা বলতে পারার ওপর গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষার গুরুত্ব ও সৌন্দর্য নিয়েও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ভাষাবিদ পবিত্র সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনকার সময়ের অনেক ছেলেমেয়েকে দেখা যায় ইংরেজি উচ্চারণে বাংলা বলার চেষ্টা করে। বাংলা বলতে তাদের কেমন যেন কষ্ট হয়।
অথচ তারা এই দেশের আলো বাতাসে, এই দেশের মাটিতেই বড় হয়েছে। যারা বাংলাদেশের মাটিতে বড় হয়ে বাংলা বলতে পারে না, ইংরেজি উচ্চারণে কথা বলে, তাদের জন্য করুণা করা ছাড়া কিছুই বলার নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে সপরিবারে নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন প্রবাসে নির্বাসিত জীবন যাপনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের পরিবারের অনেককে ছোটবেলায় বিদেশে থাকতে হয়েছে। তবু আমরা তাদেরকে বাংলাটা গুরুত্ব দিয়ে শিখিয়েছি। যেন তারা মাতৃভাষায় কথা বলতে পারে এবং তারা বলেও। তাদের উচ্চারণে যদি কোনো সমস্যা হয় সেখানে দোষ ধরার কিছু নেই। আমার বরং নিজের দেশের, নিজের গ্রামের কথা বলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ্য। বক্তৃতায় আমরা গোপালগঞ্জের ভাষা আর ঢাকার ভাষা মিলিয়েই বলি। কারণ ছোটবেলায় চলে এসেছি ঢাকা শহরে, সেই ভাষার প্রভাব। আর টুঙ্গীপাড়ার মাটিতে জন্ম নিয়েছি সেটা একটা প্রভাব, সব মিলিয়েই বলি। এর মাঝে কোনো লজ্জা নেই। বাংলার আঞ্চলিক ভাষার সৌন্দর্য বর্ণনা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয় ভাষণগুলোর প্রসঙ্গ টানেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলসহ অতিথিরা।