কলকাতা প্রতিনিধি: বাংলা বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা তাপস পাল বিদায় নিয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। বাংলা চলচ্চিত্রে তাপস পাল হয়ে উঠেছিলেন পাশের বাড়ির ছেলে। তাই নিপাট সারল্যের পাশাপাশি ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছে বীরত্ব প্রদর্শন করে নায়িকাকে উদ্ধার করার মতো একের পর এক দৃশ্যে সাবলীল অভিনয়ের মাধ্যমে তাপস পাল অভিনেতা থেকে স্টার হয়ে উঠেছিলেন। তপন সিংহ থেকে অঞ্জন চৌধুরি, অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় থেকে তরুণ মজুমদার, এমন বহু খ্যাতনামা পরিচালকের চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। আশি থেকে নব্বই দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের প্রেম, অভিমান, অনুরাগ এবং লড়াইয়ের সঙ্গে সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন তাপস।‘দাদার কীর্তি’ দিয়ে অভিনয়ের সূচনা হয়েছিল তাপস পালের। এরপর ‘অনুরাগের ছোয়া’, ‘সুরের আকাশ’,‘সাহেব’, ‘চোখের আলো’-সহ একাধিক জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। দেবশ্রী রায়, শতাব্দী রায়, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিনেত্রীদের সঙ্গে জুটি তৈরি করে একাধিক সফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের ‘উত্তরা’ বা ‘মন্দ মেয়ের উপাখ্যান’ ছবিতে তাপস অসামান্য অভিনয় করেছিলেন। অভিনয়ের পাশাপাশি এক সময় রাজনীতিতেও হাজির হয়েছিলেন তাপস পাল। ২০০৯ সালে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এই সময় থেকেই নানা কুকথার জেরে তিনি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। পরে চিটফান্ড সংস্থার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ায় তাকে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি চিট ফান্ডে আর্থিক তছরুপ কান্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে দীর্ঘ সময় কারাগারেও থাকতে হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন শেষ দিকে। ফলে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়েছিলেন। শেষ দিকে রাজনীতি থেকেও সরে এসেছিলেন। তবে অভিনয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।