যা-ই ভাবেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি কিন্তু লড়াই ছাড়া হবে না : মান্না

Slider জাতীয় রাজনীতি


ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া সারাদেশের নেত্রী, বেগম জিয়াকে আমিও নেত্রী মানি। আমি যখন দু’বছর কারাগারে ছিলাম, সেসময় যেখানে বেগম জিয়া সুযোগ পেয়েছেন- তিনি এত বড় নেত্রী হয়েও আমার মুক্তির কথা বলেছেন। আমার একটা কৃতজ্ঞতা বোধও আছে। আমি মনে করি এবং সবাই তাই মনে করে যে, খুবই অন্যায়ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, তার মুক্তির পথে আইনের কোনো বাধা নেই তাহলে তিনি জামিনতো পেতেই পারেন। কিন্তু দেয়া হচ্ছে না। রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ‘গণতন্ত্র ফোরাম’ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় তিনি একথা বলেন।

গণতন্ত্র ফোরামের সভাপতি ভিপি ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, রাজিয়া আলিম, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ।

মান্না বলেন, বিএনপি বলছে যে, তারা বেগম জিয়ার সুচিকিৎসা চান এবং নিঃশর্ত মুক্তি চান। সত্যিই কি আপনার নিঃশর্ত মুক্তি চান? তাহলে ফোন করলেন কেন? কি কথা হয়েছে ফোনে? তিনি বলেন, আজকে একটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে যে, খালেদা জিয়ার কারামুক্তির ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সাড়া পায়নি বিএনপি। সরকার কি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসবেন? আমি যেখানে সুযোগ পেয়েছি সেখানে বলেছি, আজ আবারো বলছি আজকে যদি ঘোষণা হয় আগামীকাল সকাল ১০টায় বেগম জিয়া পিজি হাসপাতাল থেকে মুক্তি পাবেন। তাহলে পিজি হাসপাতালে তাকে দেখতে এত মানুষ হবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জায়গা দিতে পারবেন না। একটার পর একটা দুই নাম্বারি করে এই সরকার ক্ষমতায় আছে। আর তারা বেগম জিয়াকে মুক্তি দেবে সেটা কল্পনা করা যায়। এটা কখনো সম্ভব নয়।

ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, তিনদিন আগে পত্রিকায় পড়লাম বেগম জিয়ার বোন তার সাথে দেখা করে বাইরে এসে বললেন বেগম খালেদা জিয়ার একটি হাত বেঁকে গেছে, আর একটি হাত বেঁকে যাচ্ছে। উনি ঠিক মতো দাঁড়াতে পারেন না, খেতে পারেন না। এমনকি সব খাবার তার বুকের ভেতর দিয়ে নামে না। এই খবর পড়ে বুকের মাঝে এমনিতেই একটি মোচড় মারে। আমি আগে মাঝে মধ্যে বক্তৃতা করতাম বেগম জিয়ার টেলিভিশনের পর্দায় আসলে অন্ধকার ঘর আলোতে ঝলমল করতো। সেই মানুষটি এখন ধীরে ধীরে মৃত্যুর সাথে লড়াই করছেন এবং আস্তে আস্তে নিঃশেষ হচ্ছেন।

মান্না বলেন, আমি কিন্তু মনে করি না বেগম জিয়া একা, তিনি অসহায়। বেগম জিয়া বাংলাদেশের সবচাইতে শক্তিশালী রাজনীতিবিদ যার পেছনে ১৭ কোটি মানুষ আছে। এই ১৭ কোটি মানুষকে মুক্তির আন্দোলনের জন্য সঙ্ঘবদ্ধ করে যদি এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে আপনারা জিতবেন।

মান্না বলেন, যদি মনে করেন জীবন বাঁচানোর জন্য যেকোনো মূল্যে আমরা বেগম জিয়ার মুক্তি চাই। সেই মূল্য এই সরকার দেবে না। একটা মানুষের মধ্যে মূল্যবোধই যদি না থাকে তাহলে কিভাবে সে কোনো কিছুর মূল্যায়ন করবে। যদি সরকারের মধ্যে সামান্য পরিমাণ কোন মূল্যবোধ থাকতো তাহলে তারা এত বড় নিষ্ঠুর হতে পারতো না। এইজন্যই লড়াই ছাড়া কোনো বিকল্প আছে বলে আমি মনে করি না। তাই আপনাদের কি সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনারা কিভাবে বেগম জিয়াকে মুক্ত করবেন। আপনাদের যদি ঐক্যফ্রন্ট ভালো না লাগে আপনাদের কাছে যদি মনে হয় আর কারো দরকার নেই আমরা নিজেরাই পারবো তাও ঠিক। কিন্তু বেগম জিয়া মুক্তি কিন্তু লড়াই ছাড়া হবে না। লড়াইয়ের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *