ঢাকা: আশকোনার হাজ ক্যাম্পে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকার পর শনিবার রাতেই বাড়ি ফিরছে চীনের উহান ফেরত যাত্রীরা। গত পহেলা ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ ফ্লাইটে দেশে আসার পর ৩১২ জন যাত্রীকে অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বিমানবন্দরের কাছেই আশকোনার হজ ক্যাম্পে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়। তাদেরকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিক্ষার পর শতভাগ নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, উহান ফেরত এই ৩১২ জনের কেউই করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে নেই। তারা সবাই সুস্থ্য আছেন এবং সুস্থ অবস্থাতেই বাড়ি ফিরছেন।
এদিকে হজ ক্যাম্পের একটি সূত্র জানায়, উহান ফেরত যাত্রীদের বাড়ি ফেরা উপলক্ষ্যে শনিবার রাতে একটি বিশেষ ভোজের আয়োজন করা হয়েছে। অনেকটা বিদায় অনুষ্ঠানের আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করছে হজ ক্যাম্পে। সেই সাথে বাড়ি ফেরার আনন্দও সবার চোখে মুখে। রাতের খাবারের ম্যানুতে থাকছে চাইনিজ সবজি, কোপ্তা পোলাও আর খাসির ভুনা। সাথে আরো থাকছে কোমল পানীয় ও মিক্সড সালাদ।
এদিকে সব কিছু ঠিকঠাক থাকার পর শতভাগ নিশ্চিত হয়েই আশকোনার হজ ক্যাম্প থেকে উহার ফেরত যাত্রীদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশে ফেরার পর দুই সপ্তাহের জন্য তাদের হজ ক্যাম্পে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অস্থায়ী পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে কোয়ারেন্টাইন অবস্থায় রাখা হয়েছিল।
সূত্র জানায় শনিবার বিকেল থেকেই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। পরীক্ষা শেষে প্রত্যেককে স্বাস্থ্য সনদ এবং সংবর্ধনা দেয়া হয়। এরপর তারা স্বজনদের সাথে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যাবেন। তবে পুরো আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হতে রাত হয়ে যাবে বিধায় অনেকে রোববার হজ ক্যাম্প ছাড়বেন।
হজ ক্যাম্পে উপস্থি স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ক্যাম্পের ভেতরে দুপুরের পর থেকেই শেষবারের মতো স্বাস্থ্য পরিক্ষা শুরু হয়েছে। এজন্য প্রত্যেককেই স্বাস্থ্য ফরম পূরণ করতে হয়েছে। সবাইকে তাদের পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হচ্ছে। এই দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাংলাদেশিদের কারোর জ্বর বা বড় ধরনের কোনো অসুখের কথা তারা শোনেননি। সবাই সুস্থ অবস্থাতেই এখন বাড়ি ফিরছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় কোয়ারান্টাইন ব্যসস্থাপনা কমিটির আহবায়ক ও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রধান মো: হাবিবুর রহমান খান নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা আজ রাতে সবাই একত্রে মিলিত হয়ে উহার ফেরত যাত্রীদের বিদায় জানাবো। একটি বিশেষ ভোজেরও আয়োজন করা হয়েছে। সবাই যাতে স্স্থ্যু শরীরের পাশাপাশি ভাল মন নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারে সেই জন্যই এই গেট টুগেদারের আয়োজন করা হয়েছে। কেননা এখানে শুরু যাত্রীরাই নন, চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত প্রত্যেক চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মকর্তারাও দিনরাত পরিশ্রম করেছেন, সেবা দিয়েছেন। আমরা প্রত্যেকের কাছেই তাই কৃতজ্ঞ।
এদিকে আইইডিসিআর এর পরিচালক ডা: মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা শনিবার গণমাধ্যম কর্মীদের উহার ফেরত যাত্রীদের নাম পরিচয় প্রকাশ না করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বেলেছেন, মিডিয়া শুরু থেকে যেভাবে পাশে থেকে সহযোগিতা করেছে এটা অনস্বীকার্য। তবে সংবাদ কিংবা ছবিতে কোনো যাত্রীর পরিচয় প্রকাশ না করতেও অনুরোধ জানান তিনি।