ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে পরিবার। পরিবারের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার এই আবেদন করেছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মেডিকেল বোর্ড যেন বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যাপারে সরকারকে সুপারিশ করে তাই এ আবেদন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন মানবিক কারণে যেন তাকে মুক্তি দেয়া হয়। প্যারোলে মুক্তির আবেদনের ব্যাপারে কিছু জানেন না বলে জানালেও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলেছেন, অসুস্থ নেত্রীর জীবন রক্ষা করাই এখন দলের কাছে মুখ্য। গতকাল সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
প্রায় দুই বছর ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়া গত বছর এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউতে চিকিৎসাধীন।
নানা ধরনের জটিল রোগে ভুগছেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ‘খালেদা জিয়া হাটতে পারেন না। বেশিক্ষণ শুয়েও থাকতে পারেন না। তার অবস্থা খুবই খারাপ।’ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টিতে জামিনে রয়েছেন তিনি। দুটি মামলায় তার ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। আর এই দুটি মামলাতেই তার জামিন নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী সরকার চাইলে যেকারও দণ্ড স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিতে পারে। খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে এ ধারা প্রয়োগ হয় কি না, অথবা তাকে প্যারোল দেয়া হবে কি না তা পরিষ্কার নয়। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, খালেদা জিয়া মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।
ওদিকে, নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের কাছে, জনগণের কাছে এখন মুখ্য বিষয়টা হচ্ছে যে, ম্যাডামের জীবনকে রক্ষা করা। কারণ এরা খুব সুপরিকল্পিতভাবে ম্যাডামকে হত্যার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা তাকে মুক্ত করতে চাই। তার জীবনকে বাঁচাতে চাই। তাকে সুস্থ করে জনগণের মধ্যে নিয়ে আসতে চাই। আমরা জনগণের কাছে যাচ্ছি। তাদের সঙ্গে নিয়ে আমরা দেশনেত্রীকে মুক্ত করার চেষ্টা করব- এখন রাজনৈতিক দল হিসেবে এটাই আমাদের কাজ। খালেদা জিয়ার প্যারোলের জন্য তার পরিবার আবেদন করছে বলে যে গুঞ্জন রয়েছে- সে বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এটা সম্পর্কে আমরা ঠিক বলতে পারব না। কারণ এটা আমরা করিনি। তার পরিবার থেকে প্যারোলের আবেদন করা হয়েছে কিনা সেটাও আমাদের জানা নেই। খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ মিছিলের অংশ হিসেবে শনিবার ঢাকায় মিছিল হবে বেলা ২টায়। নয়া পল্টনে দলের কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে মিছিলটি শেষ হবে। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আমরা তার মুক্তির জন্য আইনের সবগুলো বিষয় চেষ্টা করেছি। এখনো করে যাচ্ছি আইনগতভাবে। আমরা তো সব সময় দাবি জানাচ্ছি, আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমেও জানাচ্ছি, আমরা হোম মিনিস্টারের সঙ্গে কথা বলেছি, পার্লামেন্টেও জানানো হয়েছে। এখন পুরো বিষয়টাই সরকারের হাতে। দ্য বল ইজ ইন দেয়ার কোর্ট।